বর্তমানে মোবাইলের প্রতি শিশুদের আসক্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে। বেশিরভাগ শিশুই ব্যাপকভাবে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং ল্যাপটপ-সহ নানা ধরনের ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যবহার করে। এতে শুধু যে কেবল তাদের স্বাস্থ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়, তাদের মানসিক স্বাস্থ্যেরও যথেষ্ঠ ক্ষতি হয়। তাই অভিভাবকদের দেখা উচিত যাতে মোবাইল ফোন থেকে ছোটরা দূরত্ব বজায় রাখে।
মোবাইলে আসক্তি কীভাবে তৈরি হয়?
এটা নানা ভাবেই হতে পারে। ছোট থেকেই যদি শিশুরা বড়দের সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে দেখে সে ক্ষেত্রে তাঁদের মধ্যেও মোবাইল ব্যবহারের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। পাশাপাশি অনেক সময় খেতে না চাইলে ছোটদের মোবাইলে নানা রকমের কার্টুন, রিল ইত্যাদি দেখিয়ে খাওয়ানো হয়। অনেক সময় আবার বাচ্ছা দুষ্টুমি করলেও তাকে এক জায়গায় বসিয়ে রাখার জন্যও তার হাতে বাবা-মা তুলে দেন মোবাইল ফোন। আর এর ফলে ধীরে ধীরে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে তারা।
আরও পড়ুন: দাঁতের কালো কালো ছোপ বহু চেষ্টাতেও দূর হচ্ছে না? করুন এই ছোট্ট কাজ, দাঁত হবে মুক্তোর মতো চকচকে
মোবাইলে আসক্তি কী ভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে?
প্রতিদিন নানা ভাবে মোবাইল ব্যবহার করতে করতে তারা এক সময় এর প্রতি আসক্তি হয়ে পড়ে। পাশাপাশি শুরু হয় গেম খেলা। সেই গেমের প্রতিও আসক্তি তৈরি হয়। এছাড়াও স্যোশাল মিডিয়ায় নানা জিনিস তারা দেখে, যা হয়তো তাদের দেখারই কথা নয়। সেগুলি থেকেও তারা নানা ভুল পদক্ষেপ নেয়। তাছাড়া বহু জিনিসের বিজ্ঞাপণ দেখেও প্রভাবিত হয়, তা কেনার জেদ করে। পাশাপাশি এই সব কিছুর ফলে পড়াশোনার প্রতিও আগ্রহ কমে। এইসব বিষয় বাড়তে বাড়তে এমন এক পর্যায় গিয়ে পৌঁছয়, যে তা নিয়ে বকাবকি করলে অনেক সময় তারা আত্মহননের পথও বেছে নেয়।
সীমা নির্ধারণ: প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল শিশুদের মোবাইল ও ডিজিটাল সামগ্রী ব্যবহারের সময় সীমা বেঁধে দিতে হবে। শিশুদের এমন জিনিসগুলি দেখতে দেবেন না যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। পাশাপাশি বাচ্চাদের ফোন দেখার সময় কমিয়ে দিন।
আরও পড়ুন: চোখের সমস্যায় দারুণ উপকারী অ্যাপ্রিকট, একাই একশো! ওজন কমাতেও এর জুড়ি মেলা ভার
সৃজনশীল কাজ ও খেলাধূলা: শিশুদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে, তাদের দিন সঠিক খাবার। এছাড়াও মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে শিশুদের বাইরে খেলতে নিয়ে যান। সঙ্গে শিশুদের আঁকা, গান, নাচের মতো বিষয়ও শেখাতে পারেন, এতে তাদের সৃজনশীলতাও বৃদ্ধি পায়।
পর্যাপ্ত ঘুম: বেশিরভাগ শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে তারা ঘুমানোর আগে দীর্ঘক্ষণ ফোন ব্যবহার করে। এটি করা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। এটি তাদের ঘুমকেও প্রভাবিত করতে পারে। তাই রাতে ঘুমানোর অন্তত ২ ঘণ্টা আগে থেকে বাচ্ছার হাতে ফোন দেওয়া বন্ধ করুন।
বন্ধুত্বপূর্ণভাবে কথা: শিশুদের ভালোবাসা ও স্নেহ দিয়ে মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্ত করা যায়। এ জন্য শিশুদের মনের মধ্যে উঁকি দিয়ে তাদের সঙ্গে খোলামেলা ভাবে কথা বলার চেষ্টা করুন। এটি করার মাধ্যমে, শিশুরা তাদের সমস্যাগুলি আপনার সঙ্গে সহজেই শেয়ার করবে। এতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি হবে।