সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়
সাইপ্রাসের মতো ছোট্ট দেশ পেরেছে,কিন্তু ভারত অন্ধকারেই রয়ে গিয়েছে। তাই এখনও এ দেশে প্রতি ঘণ্টায় একজন করে থ্যালাসেমিয়া যুক্ত শিশু জন্ম হয়। রোটারি সদনে আয়োজিত ‘ওয়ার্ল্ড থ্যালাসেমিয়া ডে’র অনুষ্ঠানে অসুখটি প্রতিরোধ করার আবেদন জানালেন হেমাটোলজিস্ট চিকিৎসক সৌম্য ভট্টাচার্য।
কীভাবে এই অসুখটি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে বিভিন্ন দেশ?
সাইপ্রাস, গ্রিস, তুরস্কের মতো দেশে রক্তপরীক্ষার পরো বিয়ে ও সন্তান ধারণের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এইভাবেই ওসব দেশে রক্তের এই মারাত্মক অসুখটির প্রকোপ অনেক কমানো গিয়েছে।
থ্যালাসেমিয়া মূলত একটি বংশগত অসুখ। এই রোগে রক্তের হিমগ্লোবিন তৈরি করে এমন দু’টি জিন অস্বাভাবিক মাত্রায় থাকে। অস্বাভাবিকতার রকম ফেরে আলফা থ্যালাসেমিয়া মেজর, বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর, থ্যালাসেমিয়া মাইনর ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের থ্যালাসেমিয়া দেখা যায়।
পশ্চিমবঙ্গ,অসম,মহারাষ্ট্রে এই সমস্যা বেশি। থ্যালাসেমিয়া ট্রেটরা আসলে এই রোগের বাহক বা ক্যারিয়ার। দু’টি জিনের একটি খারাপ থাকায় এঁদের শরীরে কোনও রোগলক্ষণ থাকে না। কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মে এঁরারোগটিকে পাঠিয়ে দেন।
থ্যালাসেমিয়া মাইনর বা থ্যালাসেমিয়া ইন্টারমিডিয়া রোগীদের আসলে খুবই মৃদু ধরনের থ্যালাসেমিয়া থাকে। সেই জন্য যেখানে থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগীদের মাসে এক থেকে তিন বার রক্ত নিতে হয়, সেখানে থ্যালাসেমিয়া মাইনরে প্রতি এক বছর বা দুই বছর অন্তর রক্ত নিতে হয় বা অনেকের ক্ষেত্রে রক্ত না নিলেও চলে।
থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে রোগীকে হোল ব্লাডের বদলে প্যাকড হিমগ্লোবিন বা আরবিসি দেওয়া হয়। তবে রক্তের এই অসুখ প্রতিরোধ করাই সব থেকে বুদ্ধিমানের কাজ।
কীভাবে এই অসুখটিকে আটকানো যায়?
দুজন কেরিয়ারের বিয়ের পর সন্তান হলে শিশুর এই রোগটির আশঙ্কা খুব বেশি মাত্রায় থাকে। গর্ভাবস্থার ৯ – ১২ সপ্তাহে সিভিএস পরীক্ষা করে গর্ভস্থ শিশুর থ্যালাসেমিয়া আছে কি না জানা যায়। এই পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হলে অসুখের প্রকোপ কমবে।