আশঙ্কা যে একেবারে ছিল না, তা নয়। বহু দিন ধরেই সতর্ক করছিলেন পরিবেশকর্মীরা। এবং সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। আল্পের ইতালির অংশের সবচেয়ে বড় হিমবাহটিকে বিরাট ধস নামল। আর তাতেই চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৬ অভিযাত্রীর। এখনও অনেকে নিখোঁজ। সেই সংখ্যাটি কত, তা এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার। ইতালির ডলোমাইট এলাকায় মারমোলাডা পাহাড়ে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। এই পথ দিয়েই পাহাড়ের মাথায় ওঠেন অভিযাত্রীরা। এই এলাকার তাপমাত্রা এর মধ্যে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। শনিবার এই এলাকার তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে। বরফে ঢাকা এই এলাকার তাপমাত্রা এই পরিমাণ উঠে যাওয়ার ফলেই গোটা হিমবাহ ভেঙে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এর পিছনে ভূমিকা রয়েছে বিষ্ণ উষ্ণায়নের— তাও পরিষ্কার।
স্থানীয় প্রতিনিধি মিচেনা কানোভা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এমন এক সময়ে হিমবাহটি ভাঙতে শুরু করে, যখন বহু অভিযাত্রী দড়ি বেয়ে সামিটে পৌঁছোনোর চেষ্টা করছিলেন। হিমবাহের ধসে তাঁরা প্রায় সকলেই চাপা পড়ে যান।
ঘটনাস্থলের বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়। বাকিদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও মৃত্যু হয় এক জনের। এখনও বরফের তলায় অনেকে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে স্নিফার কুকুরদের নিয়ে সন্ধান চালানো হচ্ছে।
তবে শেষ এখানেই নয়। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই হিমবাহে আবার ধস নামবে। জুলাই মাসে তাপমাত্রা যেখানে পৌঁছেছে, সেটি সাধারণত অগস্টের মাঝামাঝি পৌঁছোয়। এমনই জানিয়েছেন স্থানীয় আবহাওয়াবিদরা। এবার জুলাই মাসে এই তাপমাত্রা সকলকেই ভাবাচ্ছে। এর পিছনে যে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের বড়সড় ভূমিকা আছে, তাও পরিষ্কার।
এর আগেও তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে ইতালির আল্পসের হিমবাহে ফাটল ধরতে পারে, হিমবাহ গলে গিয়ে ভেঙে পড়তে পারে— এমন আশঙ্কা ছিলই। তাই বারবার বিভিন্ন জায়গায় হিমবাহ কাপড় দিয়ে ঢাকার মতো উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। এই সংকট সামনে আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা।