রণবীর ভট্টাচার্য
লন্ডনের বাসিন্দা তথা কলকাতার ছেলে শাহিদ রহমান। অনুর্ধ্ব ১৩ ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে খেলেছেন যুবরাজ সিংহদের সঙ্গে। কাঁধে চোট না পেলে হয়তো ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে খেলাই ভবিতব্য ছিল শাহিদের। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে পাশ করে ইংল্যান্ড পাড়ি দেওয়ার পর জীবন অন্য পথে এগোতে থাকে তাঁর। মিডিয়া নিয়ে পড়াশোনার পর বিবিসি, স্কাই স্পোর্টসে দীর্ঘ দিন কাজ করার পরে ব্যবসা শুরু করে শাহিদ। ভুললে চলবে না শাহিদের বাবার সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ১০০র বেশি টেস্ট এবং ওয়ান ডে ম্যাচে অফিসিয়াল স্কোরার হিসেবে কাজ করেছেন এবং খেলার জগতের অনেক রথী-মহারথী তাঁকে চিনতেন। সেই শাহিদের হাত ধরেই ভারতে আসছে লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ, ঐতিহাসিক চায়ের ব্র্যান্ড, যার গুণমুগ্ধ স্বয়ং ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
ভারতীয় জীবনে চা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। চায়ে পে চর্চাই হোক কিংবা আরামকেদারায় হেলান দিয়ে একটু আয়েসি আলোচনা, চায়ের বিকল্প পাওয়া নেহাৎ সহজ নয়। শাহিদ রহমান অতি সম্প্রতি ভারতে লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের স্বত্ব নিয়েছেন। শাহিদের কথায়, ‘আমি কলকাতার ছেলে। চা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অন্যতম অঙ্গ। আমরা আশা করছি সামনের দিনে অন্তত ২০০টি স্টোর খোলার আর প্রথম বছরে অন্তত ৫০টি স্টোর খোলার।’
ব্র্যান্ডটি বিদেশি হলেও ভারতীয় খদ্দেরদের কথা মাথায় রেখে চা কিন্তু সাধ্যের মধ্যেই থাকছে। এই বিষয়ে শাহিদ আরও জানান, ‘যেভাবে বেশ কয়েক দশক ধরে স্টারবাকস উন্নত মান ও সেরা পরিষেবায় শীর্ষে থেকেছে, আমিও চাই আমাদের ব্র্যান্ড সেভাবেই এগোক। শুধু চা নয়, কফির ক্ষেত্রেও আমরা বিশ্বমানের পরিষেবা দেব ভারতীয়দের।’
বলাই বাহুল্য, এখন শহরাঞ্চলের ভারতীয়দের পক্ষে ক্যাফে - রেস্টুরেন্টে গেলে খরচ খুব একটা কঠিন বা কষ্টসাধ্য নয়। সেই দিক থেকে দেখলে শাহিদ রহমানের এই নতুন ভাবনা সফল হওয়ার দাবি রাখে। আপাতত ঠিক করা হয়েছে ভারতীয় শহরগুলোর মধ্যে মুম্বই, কলকাতা, হায়দরাবাদে প্রথম ধাপে স্টোর খোলা হবে।
তবে লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের সোনালি চায়ের পাতা নিয়ে কিন্তু দেশে বিদেশে অনেক আগ্রহ রয়েছে। ১ কেজি চায়ের দাম ১৩ কোটি টাকা! হ্যাঁ, চায়ের ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম যাকে বলে, সেটিও ভারতে নিয়ে এসেছেন শাহিদ। খুব শীঘ্রই ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে ভারতের লন্ডন টি এক্সচেঞ্জের এবং হাইকমিশনের তরফ থেকেও শাহিদ রহমানের কথা বলা হবে।
প্রথম জীবনে শাহিদ ডান হাতে ব্যাট আর হালকা অফ স্পিন করতেন। এই বার অবশ্য পিচ অত কঠিন নয় বরং শাহিদের কাছে অনেকটাই চেনা। তাই কলকাতার ছেলে শাহিদের জন্য একরাশ শুভেচ্ছা রইল।