- গরমের দাবদাহ থেকে মুক্তি দেয় বৃষ্টি। বর্ষা এলেই মন নেচে ওঠে সকলের। বর্ষাকাল ভালোবাসালেও, বৃদ্ধিপ্রাপ্ত আর্দ্রতা আমাদের চুল ও ত্বকের ক্ষতি করে থাকে। তাই আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চুল ও ত্বকের যত্ন নেওয়ার পন্থায়ও পরিবর্তন করা উচিত। মনসুনে চুলের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বৃষ্টি ও অত্যধিক আর্দ্রতা কারণে যে ধরনের চুলের সমস্যা দেখা যায়, ততৈলাক্ত স্ক্যাল্প
- ফ্রিজি হেয়ার
- খুসকি
- চুল ঝরা
- মাথা চুলকানো
মাইক্রোবায়ল ইনফেকশান (গুরুতর সমস্যা হলেমনসুনের সময় আপনার চুলই সবচেয়ে বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং এঁদের যত্ন নেওয়া জরুরি হয়। মনসুনে কী ভাবে চুলের যত্ন নেবেন, সে বিষয় জেনে নেওয়া যাক—
১. মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে নিয়মিত চুল ধুয়ে নিন। বৃষ্টিতে ভেজার পর অবশ্যই শ্যাম্পু করুন। বৃষ্টির জলে অ্যাসিডিক এবং এর পিএইচ মাত্রা ৫.৬। যা আমাদের ত্বক ও চুলের জন্য ভালো নয়।
২. মনসুনের সময় স্ক্যাল্প শুকনো রাখার চেষ্টা করুন। নরম তোয়ালে বা হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করুন। এর ফলে খুসকি ও চুল ঝরার সমস্যায় আটকানো যাবে।
৩. বড় দাঁতের চিরুনির সাহায্যে চুলের জট ছাড়ান। চুল ভেজা থাকলে সঙ্গে সঙ্গে চিরুনি করবেন না।
৪. সম্প্রতি চুল রঙ করে থাকলে কন্ডিশনার লাগিয়ে বেরোন। এর ফলে রঙ তাড়াতাড়ি ফিকে হয়ে পড়বে না। বাড়ি ফেরার পর ঠান্ডা জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে ভুলবেন না।
৫. চুল ধোয়ার আগে নারকেল তেল লাগান। ঈষদুষ্ণ নারকেল তেল দিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর্যন্ত চুলে ম্যাসাজ করে শ্যাম্পু করবেন। এর ফলে স্ক্যাল্প পুষ্টি পাবে এবং ইনফেকশানের ঝুঁকিও কমবে।
৬. এ সময় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। ডিম, আখরোট, দুগ্ধজাত খাদ্য পদার্থ, সবুজ সবজি খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করলে চুল উজ্জ্বল হবে। চুলের বৃদ্ধির জন্য বেরি, ড্রাই ফ্রুট, পালক শাক ও লাল আলু উপযোগী।
মনসুনে চুলের যত্ন নিতে বাড়িতেই কয়েকটি হেয়ার মাস্ক বানিয়ে ফেলতে পারেন—
১. সারা রাত মেথি দানা ভিজিয়ে রেখে দিন। সকালে সমপরিমাণে কারি পাতা, তুলসী, মেথি দানা ও সবুজ ছোলা বেটে নিন। স্ক্যাল্প ও চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিটের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। তার পর ধুয়ে নিন।
২. জবা ও পুদিনার পাতা বেটে নিন। এতে কয়েক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালো ভাবে লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট পর কোনও আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পু ধুয়ে চুল ধুয়ে নিন।
৩. ৩-৫ চা চামচ মেথি দানা সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পর দিন সকালে এর পেস্ট বানিয়ে নিন। নিজের চুল ও স্ক্যাল্পে এই প্যাক লাগান। ৩০-৪০ মিনিট পর জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
৪. কয়েকটি নিম পাতা ভালো ভাবে বেটে নিন। তার পর এতে ১ চা চামচ হলুদ মিশিয়ে নিন। ২০-৩০ মিনিট পর্যন্ত লাগিয়ে রাখতে হবে। তার পর জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। নিম ও হলুদ অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান থাকে। যার ফলে খুসকির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা— আবহাওয়া যেমনই হোক না-কেন আমাদের প্রত্যেককেই কোনও না-কোনও কাজের জন্য বাইরে বেরোতে হয়। স্বাভাবিক ভাবেই চুল ও ত্বকের যত্ন নেওয়া সব সময় জরুরি। তাই দেরি না করে এবং আলস্য ত্যাগ করে এই উপায়গুলির সাহায্যে চুলের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনুন।