১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ব্রিটিশদের অত্যাচার থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পেরেছিল ভারতবাসীরা। দীর্ঘ ২০০ বছর অত্যাচারিত হওয়ার পর অবশেষে ১৯৪৭ সালে ভারত একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে। তবে ভারতের ‘জাতীয় পতাকা দিবস’ পালন করা হয় ১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই, অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবসের মাত্র কিছুদিন আগে।
তিনটি রং তিনটে প্রতীক
ভারতের জাতীয় পতাকা, যাকে ‘তিরঙ্গা’ও বলা হয়। পতাকার তিনটি রং তিনটি বৈশিষ্ট্যের প্রতিনিধিত্ব করে। পতাকার ওপরের অংশে থাকা গেরুয়া রং সাহস এবং ত্যাগের প্রতিনিধিত্ব করে। মাঝের সাদা রং শান্তি এবং সত্যের প্রতীক, নিচের সবুজ রং বুদ্ধি এবং শুভ ঘটনাকে নির্দেশ করে। সবশেষে মাঝের অশোক চক্র প্রতিনিধিত্ব করে ভারতের আইনের স্বচ্ছতাকে।
(আরও পড়ুন: দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস আছে? তাহলে এই লেখাটি আপনার অবশ্যই পড়া দরকার)
জাতীয় পতাকার উদ্ভব
১৯০৬ সালে শচীন্দ্র প্রসাদ বোস এবং হেমচন্দ্র কাননুগো এই পতাকাটি ডিজাইন করেছিলেন। ১৯০৬ সালের ৭ অগস্ট এই জাতীয় পতাকাটি কলকাতার পার্সি বাগান স্কোয়ারে প্রথম উত্তোলন করা হয়। ওই একই বছর ‘কলকাতা পতাকা’ নামে পরিচিত এই পতাকাটি জার্মানির স্টুটগার্ট - এ আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনে ম্যাডাম ভিকাজি কামা ব্যবহার করেছিলেন।
জাতীয় পতাকা দিবসের ইতিহাস
ভারত স্বাধীন হওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে এই পতাকার নকশা সম্মতি পায় সকলের থেকে। এর আগে যে পতাকাটি ছিল, তাতে অশোক চক্রের পরিবর্তে চরকা আঁকা ছিল, যা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের নির্ভরতা এবং প্রতিরোধের প্রতীক ছিল। ১৯৩১ সালে চরকা থেকে অশোক চক্রের এই পরিবর্তনটি বদর-উদ- দিন তৈয়বজি দ্বারা প্রস্তাবিত হয়েছিল এবং গান্ধীজি দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল।
ভারতের পতাকা কোড
২০২২ সালে ভারতের পতাকা কোড সংশোধিত হয়। আগে শুধুমাত্র স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবসে ভারতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার অনুমতি দেওয়া ছিল। কিন্তু ২০২২ সালের সংশোধনের পর থেকে শুধু জাতীয় দিবস উপলক্ষে নয়, যে কোনও দিন জাতীয় পতাকা প্রদর্শন বা ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়, কিন্তু অবশ্যই তা সম্মান এবং মর্যাদার সঙ্গে। পতাকা উত্তোলন করতে হবে সূর্যদয় থেকে সূর্যাস্তের মধ্যে, যদি রাতে পর্যাপ্ত ভাবে আলোর ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে কোনও ভাবেই রাতের পতাকা উত্তোলন করা যাবে না।
(আরও পড়ুন: ঝড়ের গতিতে বাড়ছে চাঁদিপুরা ভাইরাস, কেন সব থেকে বেশি হচ্ছে আক্রান্ত শিশুরা)
জাতীয় পতাকা দিবসের তাৎপর্য
জাতীয় পতাকা শুধুমাত্র পতাকা নয়, প্রতিটি ভারতবাসীদের কাছে এটি একটি সম্মান। স্কুল, কলেজ বা যে কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠানে দেশের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষা কীভাবে করতে হয়, সেই সচেতনতা বৃদ্ধি করাই হলো এই দিনটির প্রধান তাৎপর্য।