ভারতীয়দের মধ্যে ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে অনেকেরই। করোনাকালে বাড়ি থেকে বেরোনোর পরিমাণ কমেছে। তাতে অনেকেরই এই ভিটামিনের অভাব আরও বেড়েছে। এমনই বলছেন চিকিৎসকরা। এর ফলে মস্তিষ্কের পুষ্টির অভাব থেকে হাড়ের ক্ষয়— সব কিছুর মাত্রাই বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভিটামিন ডি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অনেকেই সচেতন হচ্ছেন।
কিন্তু ভিটামিন ডি-র অভাব হচ্ছে বলেই কি যথেচ্ছ ভিটামিন ডি খাওয়া যায়? তা মোটেই নয়। তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণই বেশি। হিসাব করলে দেখা যাবে, শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে যতটা ক্ষতি হয়, এই ভিটামিনের মাত্রা প্রয়োজনের তুলনায় বেড়ে গেলে ক্ষতির পরিমাণ তার চেয়ে কম কিছু নয়।
কেন এমন হয়? চিকিৎসক শ্রীধর অর্চিক এই বিষয়ে হিন্দুস্তান টাইমকে জানিয়েছেন, দু’ধরনের ভিটামিন রয়েছে। একদল জলে গুলে যায়। অন্যগুলো ফ্যাটে দ্রবীভূত হয়। যে ভিটামিনগুলো জলে দ্রবীভূত হয়, সেগুোৃলোর মাত্রা শরীরে বেড়ে গেলে তুলনামূলক ভাবে কম ক্ষতি হয়। কিন্তু যে ভিটামিনগুলো ফ্যাটে দ্রবীভূত হয়, সেগুলোর মাত্রা বেড়ে গেলে তা শরীরের চরম ক্ষতি করতে পারে। কারণ এগুলো শরীর থেকে সহজে বেরোতে চায় না। নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি করে। ভিটামিন ডি’ও এ রকমই একটি ভিটামিন।
এই ভিটামিনের মাত্রা শরীরে মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেলে কী কী সমস্যা হতে পারে? চিকিৎসক শ্রীধর অর্চিক বলছেন, ‘এর ফলে শরীরে ভিটামিন ডি টক্সিসিটি হতে পারে। তার ফলে বহু ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।’ সেগুলো কী কী:
- কিডনিতে পাথর
- বমি বমি ভাব
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- অতিরিক্ত জলতেষ্টা পাওয়া
- মানসিক সমস্যা দেখা দেওয়া
- ওজন কমে যাওয়া
তবে এগুলোই শুধু নয়। আরও মারাত্মক আকার নিতে পারে এই অতিরিক্ত ভিটামিন ডি। অনেকেরই এর কারণে হাড় দুর্বল হয়ে যায়। ফলে সামান্য চোটআঘাতেও তা ভেঙে যেতে পারে। এছাড়াও হৃদরোগ বা ক্যানসারের মতো সমস্যাও ডেকে আনতে পারে অতিরিক্ত ভিটামিন ডি।
হালে ভারতে অনেকেই ভিটামিন ডি-র অভাব নিয়ে চিন্তিত। তার ফলে তাঁরা আলাদা করে ট্যাবলেট আকারে এই ভিটামিনটা খান। কিন্তু সেই সচেতনতা যেন বিপদের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। তেমনই বলছেন চিকিৎসক।