ভারতের পুরনো ঐতিহ্য এবং স্থাপত্য দেখার জন্য বহু দেশের মানুষ প্রতিবছর ভিড় করেন ভারতে। ভারতের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান যেমন দিল্লি, মুম্বাই কলকাতায় প্রচুর মানুষ প্রতিবছর আসেন ঘুরতে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রেই বিদেশি পর্যটকদের এমন কিছু অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয়, যাতে সত্যি লজ্জিত হন কোটি কোটি ভারতবাসী।
সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের দুই পর্যটক মহিলা এসেছিলেন পুরনো দিল্লিতে ঘুরতে। সেখানে এক রিকশা চালকের প্রতারণা শিকার হতে হলো তাঁদের। পুরো ঘটনাই ভিডিয়োর মাধ্যমে সামনে নিয়ে এসেছেন ওই মহিলা পর্যটক। কীভাবে মাত্র ৫ কিলোমিটার ঘুরিয়ে ৬,০০০ টাকা দাবি করলেন ওই রিক্সাচালক, সেটাও দেখা গেছে এই ভিডিয়োর মাধ্যমে।
(আরও পড়ুন: প্রাণবন্ত বন্ধু হঠাৎ চুপচাপ হয়ে গিয়েছে? জানুন কীভাবে তার খেয়াল রাখবেন আপনি?)
সিলভিয়া চ্যান, যিনি সিঙ্গাপুরের বাসিন্দা। দিল্লিতে এসেছিলেন ভ্রমণ করতে। তিনি তাঁর Instagram অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন যেখানে তিনি বলেছেন, তিনি এবং তাঁর বন্ধু পুরনো দিল্লির জামা মসজিদ এলাকায় এক রিকশাচালকের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। প্রথমে জামা মসজিদ থেকে লালকেল্লা অব্দি যাওয়ার জন্য ১০০ টাকায় রফা হয়েছিল।
তবে পর্যটকরা টাকা দিতে যাওয়ায় ওই রিক্সা চালক তাঁদের জানান, প্রথমে কোনও টাকা দিতে হবে না। সবশেষে দিলেও চলবে। দুজনের মধ্যে নম্বর বিনিময় হয়। হোয়াটসঅ্যাপে আলোচনা করা হয় কোন কোন জায়গায় নিয়ে যাবেন ওই রিক্সা চালক। সমস্ত কথা অনুযায়ী পরের দিন সকালে ওই দুই পর্যটককে জামা মসজিদ থেকে গাড়িতে ওঠান ওই রিক্সাচালক।
ওই রিক্সা চালক সিলভিয়া চ্যান ও তাঁর বন্ধুকে পুরনো দিল্লির জামা মসজিদ এলাকা থেকে লালকেল্লা নিয়ে যান। তবে পথে বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়াতে থাকেন ঐ রিক্সা চালক। মসলা বাজারে না চাইতেও জোর করে রিকশা থামান তিনি। এরপর খারি বাওলিতে রিক্সা থামিয়ে পায়ে হেঁটে বিভিন্ন দোকানে নিয়ে যান ওই দুই পর্যটককে।
সিলভিয়া ও তাঁর বন্ধু নিজেরাই দোকানে যাবেন ঠিক করেছিলেন কিন্তু ওই রিক্সা চালক বলেন তাঁকে অনুসরণ করতে। সবশেষে ওই রিক্সা চালক জানান, কৃষ্ণ মার্কেটের পর আর তিনি এগোবেন না। এরপর চাঁদনী চক থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে নিয়ে গিয়ে তাঁদের নামিয়ে দেন ওই চালক। ১০০ টাকার কথা হলেও বলপূর্বক ওই দুই মহিলার থেকে ৬ হাজার টাকা দাবি করেন ওই চালক।
(আরও পড়ুন: যাকে বন্ধু ভাবেন, এ আদৌ তার যোগ্য তো? বন্ধু দিবসে জানুন বন্ধু চেনার ৫ উপায়)
অপরিচিত একটি দেশে এসে এমন একটি অভদ্র পরিস্থিতিতে পড়তে হবে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি সিলভিয়া। কোনও উপায় না পেয়ে অবশেষে ৬০০০ টাকায় দিতে হয়েছিল ওই রিক্সা চালককে। এই পুরো ঘটনাটি একটি ভিডিয়োর মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন সিলভিয়া। ভিডিয়োটি ইতিমধ্যেই বহু মানুষ দেখে ফেলেছেন।
ভিডিয়োয় একজন কমেন্ট করে লিখেছেন, ‘একজন ভারতবাসী হিসেবে সত্যি লজ্জিত লাগছে।’ অন্য একজন লিখেছেন, ‘এর থেকে উবার বুক করলে অনেক বেশি ভালো হতো। উবার অনেক বেশি নিরাপদ।’ একজন লিখেছেন, ‘ঠিক এই কারণেই অনেকে দিল্লির মতো জায়গায় যেতে চান না।’