দিনের পর দিন বাড়তে থাকা তাপপ্রবাহে করুণ অবস্থা দক্ষিণ কোরিয়ায়। এই নিয়ে ২৬ তম গ্রীষ্মমন্ডলীয় রাতের কবলে পড়েছে দেশটি। এতটাই তাপমাত্রা বেড়েছে যে ভেঙে গিয়েছে বিগত ১১৮ বছরের রেকর্ড। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ রাতেও ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হাঁসফাঁস করছেন।
এ প্রসঙ্গে, সিউলের আবহাওয়ার পূর্বাভাস বিভাগের পরিচালক ইউন কি-হান এএফপিকে বলেছেন, উত্তর দিক থেকে কোনও ঠান্ডা বাতাস আসছে না। যেহেতু আমরা দক্ষিণ-পশ্চিমের গরম অংশ দ্বারা প্রভাবিত, তাই তাপমাত্রা ক্রমাগত ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি রেকর্ড করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: (AI model to analyse tongue: জিহ্বা বিশ্লেষণ করবেন? নির্ভুলতার সঙ্গে পরিস্থিতি সনাক্ত করতে আসছে এআই মডেল)
গ্রীষ্মমন্ডলীয় রাত কী
বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশে রাতের সময় তাপমাত্রা যদি ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়, এবং সন্ধ্যা ৬ টা থেকে পরের দিন সকাল ৯ টা পর্যন্ত ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে থাকে। তখন সেই দিনগুলিকে বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয় 'ট্রপিক্যাল নাইট' শব্দটি। বাংলায় যার অর্থ গ্রীষ্মমন্ডলীয় রাত। অস্ট্রিয়া, ক্রোয়েশিয়া, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, গ্রীস, হাঙ্গেরি, ইতালি, আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্র, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পর্তুগাল, রোমানিয়া, সার্বিয়া, স্পেন, সুইডেন এবং ব্রিটেনের মতো দেশগুলোতে এই শব্দ ব্যবহৃত হয়। তবে, দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়ার দেশ, তার সত্ত্বেও এখানকার বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৬ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করে। কিন্তু এবার সেই মাত্রা ছাড়িয়ে ২৫ ডিগ্রিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই এই দেশটির সঙ্গে 'গ্রীষ্মমন্ডলীয় রাত' শব্দ মানানসই।
১১৮ বছরের রেকর্ড ব্রেক
দক্ষিণের বন্দর শহর বুসানে গ্রীষ্মমন্ডলীয় রাত আসছে টানা ২১ দিন ধরে, যা ১৯৯৪ এবং ২০১৮ সালে স্থাপিত সর্বাধিক ক্রমাগত গ্রীষ্মমন্ডলীয় রাতের রেকর্ড গড়েছে। ১৯০৭ সালে আধুনিক আবহাওয়ার রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে সিউল চরম উত্তাপের দীর্ঘতম সময় অনুভব করেছে। ২০১৮ সালে সেট করা আগের রেকর্ডটিকে সবচেয়ে দীর্ঘ বলে মনে করা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে ২০২৪ সালের অবস্থা আবহাওয়া সংস্থার চিন্তায় ফেলেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার আরও একটি বড় শহর হল বুসান। কোরিয়ান-ভিত্তিক সাইট কেবিএস ওয়ার্ল্ডের মতে, তাপপ্রবাহে জবুথবু হয়েছে এখন। কোরিয়ান মেটিওরোলজিক্যাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (কেএমএ) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে যে বুসানে বাসিন্দাদের বৃহস্পতিবারের মধ্যে টানা ২১টি গ্রীষ্মমন্ডলীয় রাতের অভিজ্ঞতা হয়েছে। এমন রাত প্রথম শুরু হয়েছিল ২৫ জুলাই থেকে।