অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার প্রধান তিন চাহিদা। সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই মানুষ অর্থ উপার্জন করেন, যাতে শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারেন, ভালো খেতে পারেন।
কিন্তু ভারতে এমনও একটি গ্রাম আছে, যেখানকার মানুষ ভালো আয় করলেও, নিজেদের বাড়িতে তৈরি করা খাবার খান না, বাড়ির রান্নাঘরেও রান্না করেন না। সবার বাড়িতে রান্নাঘর থাকলেও, তা রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয় না।
সারা গ্রামের মানুষ খিদে মেটান কীভাবে
জানা গিয়েছে, গুজরাটের চন্দনকি গ্রামে রয়েছে এই নিয়ম। গ্রামের সরপঞ্চ বা প্রধান, যিনি এই বাড়ির রান্নাঘরে খাবার না তৈরি করার যে নিয়ম চালু করেছিলেন, তাঁর নাম পুনমভাই প্যাটেল। নিউ ইয়র্কে ২০ বছর কাটানোর পরে, গ্রামে ফিরে এই প্রথা শুরু করেন তিনি। প্যাটেলের দাবি, ‘আমার গ্রাম একে অপরের জন্য বাস করে।’
গ্রামে রয়েছে কমিউনিটি রান্নাঘর
গুজরাটের এমন একটি গ্রাম রয়েছে যেখানকার বাসিন্দারা নিজেদের বাড়িতে রান্না করা বন্ধ করে দিয়েছে। এই গ্রামে বাড়িতে খাবার রান্না না করে কমিউনিটি রান্নাঘরে রান্না করা হয়। এই রান্নাঘর থেকে দিনে দু' বার খাবার সরবরাহ করা হয়। খাওয়ার জন্য প্রতিটি পরিবার থেকে প্রতি মাসে ২০০০ টাকা করে খরচ দিতে হয়।
আরও পড়ুন: (Snake party: পুল পার্টি না, বিশালাকার অজগর নিয়ে জন্মদি্নে পালন করা হলো স্নেক পার্টি!)
প্রতিদিন বাইরে থেকে একজন বাবুর্চি আসে খাবার রান্না করতে। প্রতি মাসে আনুমানিক ১১ হাজার টাকা বাবুর্চিকে বেতন হিসাবে দেওয়া হয়। এই রান্নাঘরে অনেক ধরনের ঐতিহ্যবাহী গুজরাটি খাবার তৈরি করা হয়। খাবার খাওয়ার ঘরে বসানো রয়েছে এসি। এই এসি আবার সৌরশক্তিতে চলে। এই এসি ঘরটি কেবল খাবারের জায়গা নয়, এমন একটি জায়গা যেখানে মানুষ তাঁদের আনন্দ এবং দুঃখ ভাগ করে নেন।
আরও পড়ুন: (Durga Puja 2024 Pandal Theme: ৫৪ বছরে আহিরীটোলা যুবকবৃন্দের পুজো, মণ্ডপ সাজবে বাংলার সাবেকি আলপনা শিল্পে)
প্রবীণদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি
এই রান্নাঘরটি পরিচালনা করার লক্ষ্য হল এখানকার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সম্পর্ক আরও ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়া। সবাই যাতে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকেন, তা নিশ্চিত করা। গুজরাটের গ্রামটির এই উদ্যোগে অন্য গ্রামেও ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেয়। আশেপাশের এলাকার মানুষ এই গ্রামের এই অনন্য পরিবেশ দেখতে চন্দনকি গ্রামে বেড়াতে যান।
আরও পড়ুন: (Deepika Padukone: গর্ভাবস্থায় নিয়মিত এই কাজ করতেন দীপিকা, কী সুবিধা হয় এতে? জানালেন প্রশিক্ষক)
এই গ্রামের যুবকরা শহরে বা বিদেশে গিয়ে থাকেন। এক সময় এই গ্রামের জনসংখ্যা ছিল ১১০০ জন, যার মধ্যে এখন মাত্র ৫০০ জন মানুষ রয়েছেন গ্রামটিতে। তথ্যমতে, এ গ্রামে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রবীণ বয়স্কের বাস। আর বয়স্কদের মধ্যে যে নিঃসঙ্গতার সমস্যা দেখা দেয়, তার সমাধান করার জন্য এই পদক্ষেপ করা হয়।
গুজরাটের গ্রামটির এই দারুণ ঐতিহ্য এটাই প্রমাণ দেয় যে ইচ্ছা থাকলে, একটি অত্যন্ত সাধারণ পদক্ষেপই, ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।