সন্তানের স্মৃতিতে থেকে যাওয়ার জন্য মায়ের বহু কিছু করেন। আদি যুগ থেকেই তো আমাদের দেশে রয়েছে কাঁথা তৈরির রেওয়াজ। সদ্যজাতর জন্য কাঁথা সেলাই তো মায়েরা যুগের পর যুগ ধরে করে আসছেন। কিন্তু এখন দিনকাল বদলেছে। এখন প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতি রক্ষা করার কৌশলেও এসেছে নানা ধরনের বদল।
বিদেশে বেশ কয়েক বছর ধরেই জনপ্রিয় হয়েছে মাতৃদুগ্ধ থেকে গয়না তৈরির কৌশল। হালে ভারতেও এই পদ্ধতিতে গয়না বানাতে শুরু করেছেন সুরাটের এক মহিলা। তাঁর নাম অদিতি।
প্রাথমিক পর্যায়ে নিজের স্তন্য থেকে সন্তানের জন্য গয়না তৈরি করেছিলেন অদিতি। গয়না বলতে নেকলেস। পেশায় দন্তচিকিৎসক অদিতির বহু দিন ধরেই শিল্পের প্রতি ঝোঁক আছে। এমনই জানা গিয়েছে সংবাদমাধ্যম সূত্রে। আর সেই কারণেই নানা সময়ে গয়না ডিজাইনের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। আগে অন্য নানা জিনিস দিয়ে গয়না তৈরির চেষ্টা করেন। কিন্তু হালে তিনি জানতে পারেন এই মাতৃদুগ্ধ দিয়ে গয়না তৈরির কথা। জানার পরেই নেমে পড়েন কাজে। তৈরি করেন ফেলেন একের পর এক গয়না।
কী কী জিনিস লাগে এই গয়না তৈরিতে? সংবাদমাধ্যমকে অদিতি জানিয়েছেন, সোনা বা রুপোর কাঠানোর উপর তিনি গয়নাগুলি তৈরি করেন। বিশেষ কায়গায় মাতৃদুগ্ধ জমানো হয়। তার পরে সেই জমানো দুধ তিনি কাঠামোর মধ্যে রাখেন। এর মধ্যে শিশুর চুল বা মায়ের চুল দিয়ে নানা রকম নক্সা বানিয়ে দেন। সব মিলিয়ে দিন ১৫ লাগে যে কোনও একটি গয়না ডিজাইন করতে। এমনই জানিয়েছেন শিল্পী।
এগুলি ঠিক করে রাখতে পারলে, সারা জীবন থেকে যাবে বলে জানিয়েছেন শিল্পী। তাঁর বক্তব্য, এগুলি সারা জীবন রেখে দেওয়ার মতো উপহার হতে পারে সন্তানের কাছে।
হালে ভারতে এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। সারা ভারত থেকেই এই ধরনের গয়নার অর্ডার পাচ্ছেন তিনি। এমনই জানিয়েছেন অদিতি। তবে বলেছেন, বিদেশের মানুষও তাঁর তৈরি গয়নার ডিজাইন পছন্দ করছেন। যদিও বিদেশে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু শিল্পী এমন কাজ করছেন। কিন্তু তাঁর গয়নার ডিজাইন অনেকের এত পছন্দ হয়েছে যে, তাঁরা বিদেশ থেকে অর্জার পাঠাচ্ছেন তাঁর কাছে।
কয়েক বছর আগে বিদেশের এমনই এক শিল্পীর কথা জানা গিয়েছিল। জানা গিয়েছিল, তিনি মাসে এই ধরনের গয়না ডিজাইন করে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা উপার্জন করেন। অদিতির রোজগার কত, তা অবশ্য তিনি খোলসা করেননি।