৫০ বছর আগে শুরু হয়েছিল তাঁর গল্পটা। জীবিকা নির্বাহের জন্য শুরু করেছিলেন পথ চলা। সময়, যুগ বদলালেও তাঁর সংগ্রাম এখনও বর্তমান। অনেকেই জীবিকার টানে, পরিবারের ভরণপোষণের জন্য এবং সন্তানদের লেখাপড়া করানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। তাঁদেরই মধ্যে বেশ কিছু মানুষের বাস্তব জীবনের গল্প সামনে আসে। একইভাবে সামনে এসেছে ওড়িশার এক ব্যক্তির গল্প, যিনি প্রায় ৫০ বছর ধরে প্রায় ৪০ কিলোমিটার হেঁটে হেঁটে পাপড় বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন।
এই ব্যক্তির চক্রধর রানা, ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাসিন্দা তিনি। এখন তাঁর পরিশ্রমকে কুর্নিশ জানাচ্ছে গোটা দেশ। চক্রধর রানা ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পাপড় বিক্রি করছেন। অনেক এলাকায় মানুষ তাঁকে 'পাপড় ম্যান' নামেও চেনেন। তাঁর পরিবারের ভরণপোষণের জন্য, চক্রধর রানা উদলার রাস্তায় ঘুরে বেড়ান এবং পাপড় বিক্রি করেন। বৃষ্টি হোক বা রোদ, ঝড় বা বাতাস, কখনোই কাজে বেরনো বন্ধ করেন না।
আরও পড়ুন: (Protein Breakfast: শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি? জলখাবারে এই ৪ খাবার খেলেই বদলে যাবে চেহারা)
চক্রধর প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ কিমি হাঁটেন
মাথায় এক বান্ডিল পাপড় নিয়ে, রানা প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাজারে পৌঁছোন। রানা পাপড়ের জন্য ১০ টাকা নেন। ধীরে ধীরে বয়সও বাড়ছে চক্রধর রানার, তাই বার্ধক্যের কারণে তাঁর কাজ যেন বন্ধ না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হয়।
নিজের এই জীবিকা প্রসঙ্গে চক্রধর রানা জানান, তিনি ৫০ থেকে ৬০ বছর ধরে পাপড় বিক্রি করছেন, শুরুতে তিনি ৫ পয়সা থেকে ১০ পয়সায় বিক্রি করতেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, মুদ্রাস্ফীতির কারণে তিনি ধীরে ধীরে দাম বাড়ান। এখন তিনি ১০ টাকায় বিক্রি করেন পাঁপড়। তিনি কলকাতা থেকে আমার পাপড় নিয়ে আসেন এবং প্রতিদিন প্রায় ১,০০০ ইউনিট বিক্রি করেন।
প্রসঙ্গত, চক্রধর তাঁর কাজের জন্য কখনও লজ্জিত হননি। রানা বলেন, চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও আমি আমার কাজ নিয়ে কখনোই বিব্রত বোধ করিনি। পরিবর্তে আমি পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুবই গর্বিত।
আরও পড়ুন: (Skin Care Tips: ত্বকের চর্চায় ভরসা থাক ডিমের সাদা অংশে, বানিয়ে নিন এই স্পেশাল ফেস মাস্ক)
চক্রধর প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা রবীন মোহান্তি জানান, আমি ছোট থেকেই তাঁকে 'পাপড় ম্যান' বলেই চিনি। তিনি আমাদের উদালা এলাকার একজন সুপরিচিত ব্যক্তি, বিভিন্ন বাজারে পাপড় বিক্রি করেন। তাঁকে 'পাপড় ম্যান' হিসেবে সবাই ভালোবাসে। সবাই তাঁর পাপড়ের অপেক্ষায় বসে থাকেন। মোহান্তি আরও জানান, কাজের প্রতি চক্রধরের নিষ্ঠা আশ্চর্যজনক। তিনি আমাদের এলাকার প্রায় ৭০ থেকে ৮০ বাজারে তাঁর পাপড় বিক্রি করেন। সেগুলি বিক্রি করার জন্য তিনি ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে ডকুরাতে যান। লোকেরা কেবল তাঁর পাপড় খেতেই ভালোবাসেন না, একজন সদয় ব্যক্তি হিসেবে তাঁকে সম্মান করেন।