Baghajatin Phonepe Paratha Viral: সকাল সকাল বাঘাযতীন স্টেশন থেকে বেরিয়ে মোড়ের দিকে এগোতেই একটা ছোট্ট জটলা। দোকানের বন্ধ শাটারের সামনে বসে হলদে গেঞ্জি পরা এক ব্যক্তি। কোলে এক থালা ফলমূল ও দই। তাঁকে ঘিরেই চেঁচামেচি করছেন কিছু তরুণ-তরুণী। কী ব্যাপার? কাছে যেতেই বোঝা গেল হলদে গেঞ্জি পরা ব্যক্তিটি ফেসবুক-খ্যাত বিতর্কিত বাঘাযতীন ফোনপে পরোটার অরুণবাবু। সকাল সকাল তাঁকে ঘিরে ধরে রীতিমতো আন্দোলনের সুর তুলেছেন কিছু ব্লগার। পরোটার গুণগান রেকর্ড করতে নয়। কোনও এক বিশেষ ব্যাপারে ‘বোঝাপড়া’ করতেই মিনি জটলা লেগেছে রাস্তার ধারে। সম্প্রতি এই গোটা ঘটনার ভিডিয়োই ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে।
কী নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত?
উপস্থিত ব্লগারদের দাবি, তাদের মধ্যে কোনও কোনও ব্লগারকে একটি ভিডিয়োতে ছাপড়ি বলে উল্লেখ করেছেন বাঘাযতীনের পরোটা বিক্রেতা ডিজে অরুণ (অরুণ নস্কর নিজেকে ডিজে অরুণ বলেই পরিচয় দেন)। কিন্তু ছাপড়ি বলার কারণ কী? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্লগার জানাচ্ছেন, ‘রাজুদা, আমেরিকানদার মতো যাঁরাই জনপ্রিয় হন, তাদের ছাপড়ি বলে ছোট করার চেষ্টা করেন ডিজে অরুণ। শুধু তাই নয়, যেসব ব্লগার ওঁদের নিয়ে ব্লগ বানান, তাদেরও কখনও কখনও ছাপড়ি বলেন।’ প্রসঙ্গত, নানা ব্যক্তিকেই এমন বেফাঁস কথা বলে থাকেন ডিজে অরুণ। কিছুদিন আগে পাটুলির দোকানগুলির খাবার নিয়ে কটু মন্তব্য় করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমাও চাইতে হয় তাঁকে। পাটুলির দোকানদাররা একজোট হয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন অরুণবাবুকে।
আরও পড়ুন - ‘সবার কাছে ক্ষমা চাইছি’ হাতজোড় করে কেন এই কথা বললেন রাজুদা? দেখুন ভিডিয়ো
ব্লগারদের মন্তব্য
ওই দিনের জটলা প্রসঙ্গে রমা'স লাইফস্টাইলের ব্লগার রমা মজুমদার বলেন, ‘ব্লগারদের সঙ্গে মতের অমিল হতেই পারে। কিন্তু তা বলে এই ধরনের কথা বলে অপমান করার কোনও অর্থ হয় না। ব্লগারদের জন্যই তাঁকে ফেসবুকে আজ এত মানুষ চেনেন। এর আগে এই ধরনের নেগেটিভ মন্তব্যের জন্য তাঁকে ক্ষমা পর্যন্ত চাইতে হয়েছে। কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে শিক্ষা হয়নি অরুণবাবুর।’ কটু মন্তব্যে অরুণবাবুর বিশেষ পারদর্শিতার নিদর্শন রাজুদাকে ছোট করে বানানো একটি ভিডিয়ো দেখা গিয়েছে। ওই ভিডিয়োতে ‘রাতের খাসি সকালে বাসি’র মতো কটু কথাও বলতে শোনা যায়। এক ব্লগার বলেই ফেললেন, ‘হাবড়ার আমেরিকানদাj বিরিয়ানির বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। তাঁকেও কটু কথা শুনতে হয় ডিজে অরুণের থেকে। যার জেরে ডিজে অরুণকে নোটিস পাঠান আমেরিকানদা।’
গুগলেও নাকি তিনি বিখ্যাত
ছাপড়ি কেন বলা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন করছিলেন ব্লগাররা। এর মধ্যেই একটি ফোন আসে ডিজে অরুণের কাছে। ফোনে তাঁকে বলতে শোনা যায়, কিছু মাথামোটার সঙ্গে তিনি কথা বলছেন, ওই ব্যক্তি যেন পরে ফোন করেন। এই কথা শোনার পরে আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন ব্লগাররা। প্রকাশ্যে কটু মন্তব্য করার পরেও হি হি করে হাসতে থাকেন অরুণবাবু। বং ফুডভার্সের ব্লগার সায়নকে বলেন, তাঁকে গুগল সার্চ করলেই পাওয়া যায়। অন্যরা তাঁর ধারেকাছে নেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গুগল সার্চ করে ইউটিউব ভিডিয়ো ছাড়া আর কিছুুই দেখাতে পারেননি তিনি। এই সময়ও তাঁকে ‘পাঁঠা’ শব্দটি বলতে শোনা যায়। শেষে ক্যামেরার সামনে লাগাতার জেরার মুখ থেকে বাঁচতে উঠে ‘পালিয়ে’ যান ‘৪০০ কোটি ফেসভ্যালুর’ ফোনপে পরোটা বিক্রেতা ডিজে অরুণ।
আরও পড়ুন - দেখেছেন তো অনেকবার, কলকাতার ট্যাক্সির রং হলুদ কেন বলুন তো? আসল গল্পটা চমকে দেবে
নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া
বহুদিন ধরেই ফেসবুকে ভাইরাল বাঘাযতীনের ফোনপে পরোটা। কিন্তু পরোটার গুণমানের থেকেও বেশি ভাইরাল ওই ব্যক্তির কথার গুণমান। বেফাঁস মন্তব্য থেকে কটু, চটকদার কথার গুণই ভাইরাল করেছে বাঘাযতীনের অরুণ নস্করকে। তবে তাঁর কটু মন্তব্য ও মন্তব্য়ের পর হেয় করা হাসি দেখে অনেকেই বিরক্ত।অরুণবাবুর বিশ্বাস এগুলির জন্য়ই তিনি আজ ‘বীভৎস ভাইরাল’। তাঁর কীর্তির প্রভাব অবশ্য কমেন্টে প্রতিফলিত হয়। প্রায় প্রতিটি ভিডিয়োতেই নেটিজেনদের কটাক্ষের শিকার হন তিনি। যেমন এই দিন ব্লগারদের অপমানের প্রতিক্রিয়াও দেন অনেকে। কেউ কেউ বলেন, ‘এই সব লোকদের এড়িয়ে চলাই ভালো।’ কেউ বলেন, ‘এর ভিডিয়ো করা বন্ধ করে দিন। আর কোনও দিন ভাইরাল হবে না।’ আবার কারও কারও কথায়, ‘আপনারা এত তোল্লাই দেন বলেই ডিজে অরুণ পেয়ে বসেছে, নয়তো কোথায় ছিল এতদিন।’