৫০ হল কী হল না অমনই গুটিগুটি পায়ে গাঁটের ব্যথা, হাড়ের ব্যথা, হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার সমস্যা, পায়ে ব্যথা, গায়ে ব্যথা সহ একাধিক সমস্যা হাজির হয়। অথচ আপনি চাইলেই কিন্তু এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তবে তার জন্য আপনাকে অল্প বয়স থেকেই কিছু জিনিস মেনে চলতে হবে। তিনজন মহিলার মধ্যে একজন এবং পাঁচজন পুরুষের মধ্যে একজন বাতের ব্যথার রোগী। অস্টেওপোরেসিস রোগটি হাড়ে থাকা মিনারেলের ঘনত্ব কমে যাওয়ার কারণে হয় যা হাড় ক্ষয় করে এবং ভেঙে পর্যন্ত যেতে পারে।
আমাদের হাড়ের ঘনত্ব, ইত্যাদি তৈরি হয় আমাদের অল্প বয়সে মূলত ৩০ বছরের মধ্যেই। মহিলাদের রজোঃনিবৃত্তি হয়ে যাওয়ার পর অস্টেওপোরেসিসের সমস্যা আরও বৃদ্ধি পায়। যদি সঠিক সময় ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে হাড় ভঙ্গুর এবং দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
তাই দেখে নিন মাসিনা হাসপাতালের ফিজিওথেরাপিস্ট ডক্টর দয়ারাম প্রজাপতি কী বলছেন, কেন হয় অস্টেওপোরেসিস।
১. ক্যালসিয়াম: রোজকার ডায়েটে কম ক্যালসিয়াম থাকা মানেই হাড়ের রোগের সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়া।
২. শরীর চর্চা: নিয়মিত শরীর চর্চা করা উচিত। যাঁরা নিয়মিত শরীর চর্চা করেন তাঁদের অস্টেওপোরেসিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
৩. ধূমপান এবং মদ্যপান: যাঁরা ধূমপান এবং মদ্যপান করেন তাঁদের হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি হয় তাঁদের থেকে যাঁরা এই নেশা করেন না। ধূমপান করলে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়।
৪. লিঙ্গ: পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের হাড়ের ঘনত্ব কম হয়। যার ফলে মহিলাদের অস্টেওপোরেসিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
৫. চেহারা: যদি আপনি খুব রোগা হন বা আপনার বয়সের তুলনায় বৃদ্ধি না হয় তাহলে এর অর্থ আপনার শরীরে যতটা পরিমাণের হাড়ের ঘনত্ব এবং মাংশপেশির দরকার ছিল তা নেই।
৬. বয়স: যত আমাদের বয়স বাড়ে তত হাড় দুর্বল হয়।
অনুপ ক্ষত্রিয়, গ্লোবাল হাসপাতালের অর্থোপেডিক এর চিকিৎসক হাড় ভালো রাখতে কী করতে বলছেন দেখে নিন।
১. প্রত্যেকদিন ব্যালেন্সড ডায়েট খান। ফল, সবজি, ডাল, দুগ্ধজাতীয় দ্রব্য বেশি পরিমাণে খান রোজ। সঠিক পুষ্টি প্রয়োজন হাড়ের যত্ন নেওয়ার জন্য।
২. পূর্ণবয়স্ক পুরুষ যাঁরা ৫১-৭০ বছর বয়সী তাঁদের প্রতিদিন ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম খাওয়া উচিত। এবং মহিলাদের ১২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম খাওয়া উচিত।
৩. দুধ, চিজ, দই, ইত্যাদি খান বেশি করে।
৪. যতটা পারবেন গায়ে সূর্যের আলো লাগাবেন, এতে ভিটামিন ডি থাকে যা হাড়ের পক্ষে ভালো।
৫. ভিটামিন ই, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ইত্যাদিও খুব উপকারী মাংসপেশি এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য।
৬. নিয়মিত শরীর চর্চা করবেন। রোজ ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা করে শরীর চর্চা করবেন। এতে মাংসপেশি এবং হাড় ভালো থাকে। যেমন সাইক্লিং, চড়াই রাস্তায় ওঠা, হাঁটা, ইত্যাদি। যোগ ব্যায়াম করতে পারেন।
৭. যদি ওজন বেড়ে গিয়ে থাকেন তাহলে সেটা কমানোর ব্যবস্থা করুন, যত ওজন বাড়বে তত হাড়ের উপর চাপ পড়ে।
৮. যতটা পারবেন কোল্ড ড্রিঙ্কস, কফি, ইত্যাদি জাতীয় খাবার কম খাবেন। কারণ এই পানীয়গুলো শরীরের ক্যালসিয়াম শুষে নেয়।
৯. মদ্যপান এবং ধূমপান কম করবেন।
১০. যখন বসবেন বা হাঁটবেন সঠিক ভাবে বসবেন বা হাঁটবেন।