বয়স মাত্র ২০ মাস। খেলা করছিল একটি পুলের ধারেই। হঠাৎই করেই বেখেয়ালে জলে পড়ে যায় একরত্তি শিশু। সম্প্রতি ২৪ জানুয়ারি কানাডার পেট্রোলিয়ার একটি হোম কেয়ারে এমনই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। জল থেকে তুলে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন আর প্রাণ নেই তার। প্রায় পাঁচ মিনিট জলে থাকার পর শরীর একেবারে নিস্পন্দ ও ঠান্ডা। অর্থাৎ বাঁচার কোনও আশা নেই বলা যায়।
তখন আশেপাশে হাসপাতাল বলতে শার্লট ইলিয়েনর এঙ্গলহার্ট হাসপাতাল। সেখানে শিশুর চিকিৎসা পরিষেবা একেবারেই প্রাথমিকস্তরে রয়েছে। মূল শহর লন্ডন সেখান থেকে ১০০ কিমি দূরে। সেখানে গেলে তবেই মিলবে উন্নত পরিষেবা।
তা করার সময় নেই দেখে সীমিত পরিষেবা নিয়েই শুরু হল ওয়েলন সন্ডার্সকে বাঁচানোর প্রক্রিয়া। তাকে বাঁচিয়ে তুলতে হাসপাতালে উপস্থিত সবাই রীতিমতো জান লাগিয়ে দিলেন। ওই মুহূর্তে উপস্থিত নার্স থেকে ল্যাব ওয়ার্কার সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়েন সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) প্রক্রিয়ায় শিশুকে বাঁচিয়ে তুলতে। মোট কতক্ষণ ধরে চলেছিল সেই প্রক্রিয়া? শুনে কিছুটা অবাক লাগলেও তিন ঘন্টা ধরে সিপিআর পদ্ধতি চলে ওই শিশুর। আশা একটাই। যদি কোনও মিরাকলে বেঁচে ওঠে একরত্তি! আর মিরাকল হলও বটে।
কীভাবে চলে একরত্তিকে বাঁচানোর প্রক্রিয়া?
চিকিৎসক টেলর সংবাদমাধ্যমকে জানান, এটি সত্যিই একটি টিমের সাফল্য। সেদিন যারা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা প্রত্যেকে কেউ না কেউ কিছু না কিছু করেছেন। যেমন ল্যাবের টেকনিশিয়ান একদিকে একটি পোর্টেবল হিটার ধরে রেখেছিলেন। অন্যদিকে ইএমএস-এর লোকেরা কম্প্রেসর ঘুরিয়ে সিপিআর পদ্ধতিতে সাহায্য করছিলেন। এছাড়াও নার্সরা মাইক্রোওয়েভে জল গরম করে একরত্তিকে গরম রাখার চেষ্টা করছিলেন। এদিন সংবাদমাধ্যমকে টেলর বলেন, লন্ডনের হেল্থ সায়েন্সেস সেন্টার থেকে বিশেষজ্ঞরা পুরো দলটিকে সাহায্য করছিলেন। দীর্ঘ তিন ঘন্টার চেষ্টায় ছোট্ট একরত্তিকে বাঁচিয়ে তোলেন হাসপাতালের সবাই।
৬ ফেব্রুয়ারি ওয়েলনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এখন সে বাড়িতে বহাল তবিয়তে রয়েছে। সেই ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় দুই সপ্তাহ। চিকিৎসক টেলর ও চিকিৎসক তিজসেন এই দিনের ঘটনা দেখে রীতিমতো অভিভূত। তাঁরা সংবাদমাধ্যমকে এও বলেন, দক্ষতা, মনোবল আর সবাই মিলে কাজ করার ফলেই ফিরে পাওয়া গিয়েছে ওয়েলনকে!
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup