সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়
আমাদের দেশে প্রতি বছর ১১.৬ লক্ষ মানুষ নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO-র এই হিসাব ভয় ধরায়। তবে ক্যানসার মানেই ‘নো অ্যানসার’ এই ধারণাটা বদলে গিয়েছে। শুরুতে চিকিৎসা করলে ক্যানসার রুখে দিয়ে দীর্ঘজীবি হওয়া যায়। ক্যানসারের প্রাথমিক উপসর্গ সম্পর্কে সচেতন করলেন চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা চিকিৎসক জয়ন্ত চক্রবর্তী।
ধূমপানের নেশা ক্যানসারের অন্যতম কারণ। আবার অতিরক্ত ওজন, সারাদিন বসে বসে কাজ করা, কৃত্রিম রাসায়নিক ও রং মেশানো জাংক ফুড ক্যানসার ডেকে আনতে পারে।
শুরুতে অসুখটি ধরা পড়লে সঠিক চিকিৎসার সাহায্যে অসুখের বিস্তার আটকে দিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায়। অত্যাধুনিক চিকিৎসায় এই কঠিন অসুখ আটকে দেওয়া যায়। সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিয়োথেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি-সহ নতুন নতুন ওষুধ ও চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্যে ক্যানসারকে জব্দ করা সম্ভব। তবে কিছু কিছু উপসর্গ দেখলে কোনও রকম গড়িমসি না করে ডাক্তার দেখান উচিত।
কী কী লক্ষণ দেখলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?
- শরীরের কোনও অংশে ব্যাথাহীন টিউমার
- মুখে, মাড়িতে ঘা, সেটি কোনও চিকিৎসাতেই কমছে না
- মলত্যাগের সময় ও অভ্যাস হঠাৎ করে বদলে গেলে
- ডায়েটিং বা এক্সারসাইজ না করে কোনও কারণ ছাড়াই ওজন কমে যেতে শুরু করল
- অরুচি, খিদে কমে যাওয়া, বমি বমি ভাব হচ্ছে
- শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কালসিটে দাগ অথচ কোনও ব্যথা নেই
- মাথা ঝিম ঝিম, মাথা ঘোরা ও সামগ্রিকভাবে দূর্বল লাগা
- টানা সর্দি কাশি, অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ না হওয়া
- মাড়ি, প্রস্রাব বা মলের সঙ্গে রক্তপাত, শরীরের অন্যান্য অংশ থেকেও রক্তপাত
- স্তনবৃন্ত থেকে নিঃসরণ, রক্তপাত
- কাশির সঙ্গে বা নাক দিয়ে রক্তপাত
- ত্বকের কোনও তিল বা আঁচিলের আকার বা রং বদলে যাওয়া
- মেনোপজের পর আচমকা ব্লিডিং শুরু হওয়া,
- গলার স্বর ভেঙ্গে যাওয়া এবং দীর্ঘদিন চিকিৎসা করেও ঠিক না হওয়া
এই সব লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তার দেখানো উচিত।
উপরোক্ত উপসর্গ মানেই যে ক্যানসার এমন ভেবে ভয় পাবেন না। আসলে ক্যানসার এমনই একটা অসুখ যে দু’-একটি নির্দিষ্ট উপসর্গ দেখে রোগ সম্পর্কে সন্দেহ করা যায় মাত্র। নির্দিষ্ট কিছু পরীক্ষার সাহায্যে রোগ সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা যায়। উপসর্গের শুরুতে ধরা পড়লে সঠিক চিকিৎসার সাহায্যে ক্যানসার মুক্তি সম্ভব। ভয় না পেয়ে সচেতন থাকুন, ভালো থাকুন।