২০২০ সালে চীন দেশ থেকে যে মহামারীর উৎপন্ন হয়েছিল, তা এক প্রকার নিঃশেষ করে দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। তবে আজ মানুষ অনেকটাই পেরিয়ে এসেছে সেই দুঃস্বপ্নকে। প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেকটাই বেড়েছে মানুষের শরীরে, কিন্তু আপনি কী জানেন, কোভিড মুক্ত হওয়ার পরেও মানুষ এই সংক্রমনের শিকার হয়ে থাকেন?
সম্প্রতি অ্যারিজোনা, অক্সফোর্ড এবং লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা কয়েক ডজন মানুষের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছিলেন, যারা আগে কোভিডে আক্রান্ত ছিলেন। গবেষণা থেকে জানা গেছে, ওই ব্যক্তিদের মধ্যে এমন কিছু উপসর্গ এখনও বর্তমান, যা ‘পোস্ট কোভিড’ নামে পরিচিত।
(আরও পড়ুন: মরণোত্তর দেহদান প্রয়াত বুদ্ধদেবের, এর আগে জ্যোতি বসু সহ কোন ভারতীয়রা এই কাজ করেছেন?)
লং কোভিড, যাকে এক কথায় বলা যায় পোস্ট কোভিড, এটি করোনা আক্রান্তের ৩ মাস বা তার বেশি সময় ধরে চলা কিছু উপসর্গকে ব্যাখ্যা করে। করোনা আক্রান্তের পর মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বেশ কিছু ক্ষতি হয়ে যায়, কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং শ্বাসকষ্ট বা অস্বস্তির মতো সমস্যা দেখা দেয়। এটি শুধু কয়েক মাস নয়, কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।
লং কোভিড শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক, যে কোনও মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক মানুষ রয়েছেন যারা লং কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন আবার অনেকে এখনও পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে রয়েছেন। আবার অনেকের রয়েছেন যারা ভ্যাকসিন তৈরি হওয়ার আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তারা এখনও অসুস্থ হয়ে রয়েছেন।
গবেষকরা জানিয়েছেন, যদি একজন মানুষ প্রত্যেকটি টিকা নিয়ে থাকেন, তাহলে লং কেভিডের ঝুঁকি অনেক কমে যায়। তবে এই মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী ৩ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ মানুষ লং কোভিডে আক্রান্ত। এই সমস্যা এড়ানোর একমাত্র উপায় হল, কোভিড হলেই অবিলম্বে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ গ্রহণ করতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ভ্যাকসিন নেওয়ার মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ রাখতে হবে।
(আরও পড়ুন: কীভাবে করতে হয় দেহদান? কারা করতে পারেন? মৃত্যুর পর পরিবারের কী করণীয়, জানুন পুরোটা)
প্রসঙ্গত, লং কোভিড শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিকে নয়, একজন পরিবার তথা গোটা সমাজের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। কোনও মানুষ যদি দুই বছর বা তার বেশি সময় ধরে অসুস্থ হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সেই মানুষের পরিবারের আর্থিক এবং মানসিক সমস্যা তৈরি হয়। তাই সবার আগে কোভিড থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় গুলি খুঁজে বার করতে হবে এবং নিজেকে রাখতে হবে সুস্থ।