বাসন মাজার সাবান। সেটি আবার শুধুমাত্র পুরুষদের জন্য। হালে একটি বিজ্ঞাপনে এই কথাই বলা হয়েছে। আর সেটি নিয়েই বিরাট চর্চা। বা বলা ভালো রঙ্গ রসিকতা এবং সমালোচনা।
ঘটনাটি কী ঘটেছে?
সম্প্রতি এক নামী বাসান মাজার সাবান প্রস্তুতকারী সংস্থা একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, এক পুরুষ জিমে বসে এক মহিলাকে বলছেন, কাল রাতে বাসন মাজতে গিয়ে খুব পরিশ্রম হয়েছে। মাকে সাহায্য করতে গিয়েই বাসন মেজেছেন তিনি। আর সাহায্য তো করাই উচিত। ঠিক তখনই সেখানে হাজির হন মিলিন্দ সোমন। গাদা বাসন সেই পুরুষটির হাতে ধরিয়ে দেন তিনি। সঙ্গে একটি বিশেষ বাসন মাজার সাবান। বলেন, ‘মহান কাজটি করে মজা পেয়েছো তো? তাহলে নাও ভিম ব্ল্যাক। আর মন ভরে গর্ব করো।’
বিজ্ঞাপনটি নিয়ে জটিলতা:
এই বিজ্ঞাপনটির দেখে বহু মানুষই প্রথমে বুঝতে পারেননি বিষয়টি কী। তার পরে তাঁরা টের পেয়েছেন, এটি শুধুমাত্র পুরুষদের ব্যবহার করার মতো একটি বাসন মাজার সাবানের বিজ্ঞাপন। তার পর থেকেই বিরাট চর্চা শুরু হয়েছে এটি নিয়ে। কেউ কেউ বলেছেন, বিষয়টি অত্যন্ত হাস্যকর। কারও কারও বক্তব্য, কালে কালে আর কত দেখতে হবে। কেউ প্রচণ্ড রেগে গিয়েছেন, এবং বলেছেন, ব্যবসার জন্য আর কী কী করবে একটি প্রতিষ্ঠান!
জোর সমালোচনা:
শুধু ভিডিয়ো নয়, এর একটি ছাপা বিজ্ঞাপনও প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, এক পুরুষ যা বলছেন, বাংলায় তার অর্থ দাঁড়ায়, ‘আমি পারব, এটি জানতামই না, যত ক্ষণ না এটি করলাম।’ তার সঙ্গে দেখা যাচ্ছে, তিনিও বাসন মাজছেন। আর পাশে রাখা ওই বিশেষ সাবান।
এতেও রেগেছেন অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, এই বিশেষ সাবান কি পুরুষদের বাসন ধরতে শেখাবে? কেউ আবার চটে গিয়ে বলেছেন, লম্বা-বেঁটে, রোগা-মোটা, রাগী-মনমরা— সব ধরনের পুরুষের জন্য এবার কি আলাদা আলাদা সাবান আসবে বাজারে?
অন্য অর্থ আছে কি?
কেউ কেউ এর পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছেন, এর পিছনে অন্য কোনও অর্থ নেই তো? এটি আসলে মজার কোনও বিজ্ঞাপন নয় তো? বা কোনও বার্তা দেওয়ার প্রচেষ্টা? তেমন অভিমতও উঠে এসেছে নানা মহল থেকে।
কোথায় পাওয়া যাচ্ছে এই সাবান?
বিজ্ঞাপনের সঙ্গেই দেওয়া হয়েছে লিংক। সেখানে ক্লিক করলেই হাজির হওয়া যাচ্ছে অন্য একটি ওয়েবসাইটে। আর দেখা যাচ্ছে এই সাবানের দামের জায়গায় ০ টাকা। অর্থাৎ এটির কোনও দামই নাকি নেই।
প্রস্তুতকারক সংস্থা কী বলছে?
প্রস্তুতকারক সংস্থার তরফে এই বিজ্ঞাপনের সঙ্গেই লিংকটি দেওয়া হয়েছিল। সেখানে গেলে এটিও দেখা যাচ্ছে, আসলে এটি ঠাট্টা।
তবে শুধু নিছক ঠাট্টা নয়, চেষ্টা আছে বার্তা দেওয়ারও। কাজের আসেল কোনও লিঙ্গভেদ হয় না, বাসন মাজার মতো কাজগুলিকে শুধুমাত্র মহিলাদের কাজ বলে দাগিয়ে দেওয়ার যে পুরুষতান্ত্রিক প্রবণতা আছে, তাকে নিয়েই রসিকতা করা হয়েছে এই বিজ্ঞাপনে। আর সেটিই বলা হয়েছে শেষে।