রণবীর ভট্টাচার্য
আজ মা দিবসে বন্ধু-বান্ধব, পরিচিত-অপরিচিত অনেকের মায়েদের দেখার সৌভাগ্য হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। কিছুটা নস্টালজিয়া, কিছুটা আন্তরিকতা আবার কিছুটা হয়তো দেখনদারি রয়েছে পুরো বিষয়টির মধ্যে। সম্পর্কের উদযাপন হয় না তবে একদিন মনে রাখার মধ্যে খারাপ কিছু নেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠে আসে, যে মহিলা মানেই কি মাতৃত্ব? মা হওয়া বা না হওয়ার ইচ্ছের কি স্বীকৃতি রয়েছে সমাজে?
বদলেছে সমাজ, বদলেছে ভাবনা। গড় বিয়ের বয়স বদলেছে। এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে বিয়ের কথা হবে আধুনিক নারী। অনেকেই মনে করেন যে বিয়ে করবেন না। কেউ কেউ সংস্থার কর্ণধার, কেউ স্টার্ট আপ চালাচ্ছেন, কেউ দোকান, কেউ স্কুলের চাকরি, কেউ বা বাড়িতে থেকেই কাজের সাথে যুক্ত - অনেকেই মনে করেন যে বিয়ে করবেন না। এই সিদ্ধান্তের মধ্যে সত্যি কোথাও ভুল নেই। কিন্তু সমাজ কি মেনে নেয়? কোন বিবাহিত মহিলা যদি মনে করেন যে সন্তানধারণ করতে চান না, বাড়ির লোক কি আদেও তা মেনে নেবেন? এখনও ভারতের প্রায় সমস্ত রাজ্যেই সন্তান হিসেবে 'ছেলে' চাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। এমনকি কন্যা সন্তান হলে একঘরে করে দেওয়া, অপমান করা এমনকি অত্যাচার করার ঘটনাও ঘটে চলেছে। সেখানে সন্তান ধারণ না করার সিদ্ধান্ত ভাবা দুষ্কর। এরকম দেখা দিয়েছে যে শারীরিক সমস্যার কারণে সন্তান ধারণ করতে অপারগ, কিন্তু বাড়ির তার সত্বেও দত্তক নন, বরং 'নিজেদের' সন্তান চান।
গত কয়েক প্রজন্মকে দেখতে হয়েছে যে ভারতের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মায়েদের অনেক বেশি কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে পরিবারে। সন্তান হওয়ার পর চাকরি ছেড়ে দেওয়ার উদাহরণ রয়েছে ভুরি ভুরি। সেক্ষেত্রে নিজের ইচ্ছের থেকেও বাড়ির লোকের চাপ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে থাকে। কোথাও কি এরকম হয়েছে যে সন্তান হয়েছে বলে কোন বাবা চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন যে বাচ্চাকে মানুষ করতে সুবিধা হবে?
সমাজে পরিবর্তন আসছে। মানুষের ভাবনার অনেক দ্বার খুলেছে। তাই মাতৃত্ব নিয়ে ভাবনাও আসা স্বাভাবিক। ভুললে চলবে না আজও কিন্তু ধর্ষণে বা গণধর্ষনের শিকার হলে সেই মহিলাকে আইনের অনুমতি নিতে হয় গর্ভপাতের জন্য। লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন করা শুরু হোক এই মাদারর্স ডে থেকেই!