বাংলা নিউজ > টুকিটাকি > Viswakarma Puja: বিশ্বকর্মার তৈরি সেরা স্থাপত্যগুলি কী কী? কী বলছে পুরাণ

Viswakarma Puja: বিশ্বকর্মার তৈরি সেরা স্থাপত্যগুলি কী কী? কী বলছে পুরাণ

বিশ্বকর্মার জন্ম এবং কাজ

Viswakarma Puja History: মনে করা হয়ে থাকে আর্যাবর্তের সমস্ত শিল্পই তাঁর তৈরি করা। বাস্তুশাস্ত্রম বইতে তাঁর তৈরি স্থাপত্য বিষয়ক নানান জিনিস জানতে পারা যায়।

হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী মনে করা হয় বিশ্বকর্মা হলেন দেবতাদের শিল্পী। তাই তাঁকে দেবশিল্পী বলা হয়ে থাকে। পুরাণ মতে বিশ্বকর্মার জন্ম হয়েছিল ব্রহ্মার নাভি থেকে। তাঁর এক হাতে থাকে দাঁড়িপাল্লা, যেখানে একটি পাল্লা বোঝায় জ্ঞান আরেকটি বোঝায় কর্মের প্রতীক। তাঁর অন্য হাতে থাকে হাতুড়ি যা নির্মাণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত।

বিশ্বকর্মার বাহন হল হাতি। তিনি হলেন হিন্দু শাস্ত্রের চার উপবেদের অন্যতম স্থাপত্যবেদের রচয়িতা। গোটা বিশ্বের মূল বস্তুকার হলেন বিশ্বকর্মা,e এমনটাই মনে করা হয়ে থাকে। তাঁর লেখা দশটি পুঁথির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও মনে করা হয়ে থাকে আর্যাবর্তের সমস্ত শিল্পকাজ তাঁরই করা। তাঁর লেখা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বই হল বস্তুশাস্ত্রম।

তাঁর তৈরি চারটি অমর সৃষ্টি হল দ্বারকা, লঙ্কা, হস্তিনাপুর, এবং ইন্দ্রপ্রস্থ।

স্বর্ণলঙ্কা, বা বর্তমানের শ্রীলঙ্কা: বাল্মীকির রামায়ণ অনুযায়ী রাবণের রাজধানী ছিল স্বর্ণলঙ্কা। দেবী পার্বতীর সঙ্গে বিয়ের পর শিবের একটি প্রাসাদ বানানোর ভার দেওয়া হয় বিশ্বকর্মাকে। তিনি সোনা দিয়ে তৈরি করেন এক দারুন প্রাসাদ। শিব সেই প্রাসাদে প্রবেশের আগে রাবণকে আমন্ত্রণ করেন পুজোর জন্য। রাবণ তখন রাজা হননি। তিনি কেবল এক ঋষি। রাবণ এসে সেই প্রাসাদে পুজো তো করেন, কিন্তু পুজোর শেষে দক্ষিণাস্বরূপ চেয়ে নেন সেই প্রাসাদ এবং স্বর্ণলঙ্কা। শিব তাঁকে সেই প্রাসাদ দান করেন। এরপর সেটাই হয়ে যায় রাবণের রাজধানী।

অন্য মত অনুযায়ী, বিশ্বকর্মা এই সোনার লঙ্কা বানিয়েছিলেন কুবেরের জন্য, যা রাবণ তাঁর সৎ ভাই কুবেরকে হারিয়ে দখল করে নেন।

দ্বারকা: মথুরা ছাড়ার পর কৃষ্ণের জন্য একটি নতুন শহর প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তখন তিনি দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার সাহায্য নেন। তখন বিশ্বকর্মা জানান সনুদ্রদেব যদি তাঁকে কিছু জমি দান করেন তাহলে তিনি সেই নগরী বানাতে পারবেন। কৃষ্ণ সমুদ্রদেবের পূজা করেন। তিনি খুশি হয়ে কৃষ্ণকে ১২ যোজন জমি দান করেন। তারপর বিশ্বকর্মা সেখানেও বানান দ্বারকা নগরী। এই গোটা শহর ছয়টি ভাগে ভাগ করা ছিল। ৭ লাখের কাছাকাছি ছোট বড় প্রাসাদ ছিল এখানে। এছাড়া ছিল একটি বৃহৎ সভাঘর যা সুধর্ম সভা নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু কৃষ্ণ মারা যাওয়ার পর এই নগরী ফের সমুদ্রে তলিয়ে যায়।

হস্তিনাপুর: কৌরব এবং পাণ্ডবদের রাজধানী হস্তিনাপুরও তাঁর তৈরি করা। আর এই গোটা নগরীকে কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছিল মহাভারত। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর যুধিষ্ঠিরকে এই নগরীর রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করা হয়।

ইন্দ্রপ্রস্থ: কৃষ্ণের অনুরোধে বিশ্বকর্মা পাণ্ডবদের জন্য তৈরি করেছিলেন ইন্দ্রপ্রস্থ। ধৃতরাষ্ট্র এক টুকরো জমি দিয়েছিলেন পাণ্ডবদের থাকার জন্য। সেই খাণ্ডবপ্রস্থে থাকতেন যুধিষ্ঠির এবং তাঁর চার ভাই। কিন্তু এখানে যখন আগুন লাগে তখন অশ্বসেন, ময়দানব এবং চারটি পাখি বেঁচে যায়। তখন ময়দানব প্রাণভিক্ষা পাওয়ার জন্য এখানে একটি নগর বানাতে শুরু করেন। পরে তিনি বিশ্বকর্মার সাহায্য প্রার্থনা করেন। এরপর তৈরি হয় ইন্দ্রপ্রস্থ। এই নগর এতটাই সুন্দর ছিল সেটাকে মায়ানগরী বলা হতো।

এগুলো ছাড়াও তিনি তৈরি করেছিলেন সুদর্শন চক্র, ত্রিশূল, ইন্দ্রের বজ্র, ইত্যাদি। এমনকি জগন্নাথ দেবের মূর্তিও তাঁরই নির্মাণ করা।

বন্ধ করুন