গত দু বছরে কোভিড সমস্ত বিশ্ববাসীর প্রাণ জেরবার করে দিয়েছে। অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এই অল্প সময়ে। টিকা আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত কার্যত অসহায় ছিল মানুষ। টিকা আসার পর রোগের ভয়াবহতা কিছুটা হলেও কমেছিল। এবার এর জীবনদায়ী গুণকেই কাজে লাগাতে চলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আগামী দিনে বড়সড় মহামারির কারণ হতে পারে এমন প্যাথোজেনের উপর গবেষণার ডাক দিয়েছে হু। গত ১৮ নভেম্বর সারা পৃথিবীর মোট ৩০০ জন বিজ্ঞানীকে নিয়ে একটি মিটিং-এর আয়োজন করা হয়েছিল। সেই মিটিং দিয়েই এই বিশেষ অভিযান শুরু করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্দেশ্য, কম গবেষণা হয়েছে এমন প্যাথোজেনদের নিয়ে আরও গবেষণা চালিয়ে যাওয়া। যাতে পরবর্তীকালে এগুলো মহামারির কারণ হলেও টিকা তৈরিতে সমস্যা না হয়। এদিনের মিটিং-এ মোট ২৫ টি আলাদা গোত্রের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াকে চিহ্নিত করা হয়। এদের উপরেই বিশ্ব জুড়ে আগামীদিনের গবেষণা এগিয়ে চলবে, এমনটাই পরিকল্পনা হু-এর।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজিকিউটিভ ডাইরেক্টর মিচেল রায়ান জানান, কোভিডের সময় ভাইরাসের প্রকৃতি জানা ছিল না। তাই প্রথম প্রথম কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া যায়নি। যতদিনে টিকা আবিষ্কার হয়েছে, ততদিনে মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। ভবিষ্যতে তেমন পরিস্থিতি যাতে না হয় তার জন্যই এই উদ্যোগ।
হু-এর তরফে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি রোগকে চিহ্নিত করা হয়। এই রোগগুলি সারা বিশ্বে না ছড়ালেও বিভিন্ন দেশে ও মহাদেশে বেশ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছিল। এর মধ্যে রয়েছে ইবোলা, মারবার্গ, কোভিড, লাসা ফিভার, ক্রিমিয়ান-কং হেমারেজিক ফিভার, জিকা, নিপা, রিফ্ট ভ্যালি ফিভার, মিডল-ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম, সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম ইত্যাদি। এগুলোর পাশাপাশি ডিজিজ এক্স নামে এক অভিনব রোগের কথাও তুলে ধরে হু। আসলে প্যাথোজেনদের থেকে অজানা কোনও রোগও ছড়িয়ে পড়তে পারে মহামারি আকারে। ঠিক যেমনটা হয়েছিল কোভিডের সময়ে। তাই এমন অভিনব নামকরণ।
প্যাথোজেন ও রোগের এই তালিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৭ সালেই তৈরি করেছিল । এরপর তাতে যোগ করা হয় সাম্প্রতিককালের রোগগুলির নাম। সব ক'টি মিলিয়ে এবার খামতি থাকা জায়গাগুলো চিহ্নিত করেই এগিয়ে চলবে বিজ্ঞানের পরীক্ষা নিরীক্ষা।