হিজরি ক্যালেন্ডারের দ্বাদশ এবং শেষ মাস ধুল হিজার দশম দিনে পালন করা হয় ইদ-উল- আধা। এই দিনটিকে বকরি ইদও বলা হয়। আকাশে নতুন চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গে মুসলিম ধর্মালম্বীর মানুষরা ইদ পালন করতে শুরু করেন।
কেন শুরু হয়েছিল বকরি ইদ?
ইসলাম মত অনুসারে, ইব্রাহিম আল্লাহর স্বপ্নাদেশ পেয়ে নিজের ছেলে ইজরায়েলকে আল্লাহর কাছে বলে দিতে তৎপর হন। সন্তানকে বলি দেওয়ার সময় ইব্রাহিম চোখে কাপড় বেঁধে নেন। কিন্তু চোখ খুলে ইব্রাহিম দেখেন, তাঁর ছেলে হাসিমুখে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ঠিক সেই মুহূর্তে আল্লাহ ইব্রাহিমকে দেখা দেন এবং তাকে একটি ভেড়া দিয়ে বলেন, ছেলের পরিবর্তে ওই ভেড়াটিকে উৎসর্গ করতে। ওই ঘটনার পর থেকেই প্রতিবছর ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা বকরি ইদ উপলক্ষে বাজার থেকে কিনে নিয়ে আসেন ভেড়া, গরু অথবা ছাগল। সেই প্রাণীটিকে খাইয়ে-দাইয়ে যত্ন করে অবশেষে ইদের দিন ঈশ্বরের নামে বলি দেন। এইভাবেই পালন করা হয় বকরি ইদ।
(আরো পড়ুন: 'নিরামিষ' মাংসের খোঁজ চলছে! সয়াবিন দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভিগান কাবাবও)
ইদ উপলক্ষে যে পশুটিকে বলি দেওয়া হয় সেই পশুটির মাংস তিন ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম ভাগ পরিবারের কাছে যায়, দ্বিতীয় ভাগ বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজনদের দেওয়া হয় এবং তৃতীয় ভাগ দেওয়া হয় গরীব দুঃখীদের। কোরবানির পাশাপাশি, এই দিন মুসলিমরা আরও একটি বিশেষ প্রার্থনা করেন যাকে বলা হয় সালাহ। ইদের দিন মসজিদে জমায়েত করে এই বিশেষ প্রার্থনাটি করেন মুসলিমরা।
ইদের আচার অনুষ্ঠান
ইদের নামাজ: ইদের দিন মুসলিমরা মসজিদে নামাজের মাধ্যমে দিনটি শুরু করেন। এই বিশেষ প্রার্থনাটিকে বলা হয় সালাহ। মসজিদ বা খোলা মাঠে বিপুল সংখ্যক মুসলিম একত্রিত হয়ে এই নামাজ পড়েন।
কোরবানি: নামাজ পড়ার পর ভেড়া, ছাগল, গরু অথবা উটের মত পশুকে জবাই করে পরিবার বন্ধু-বান্ধব এবং দরিদ্রদের মধ্যে দান করা হয়।
(আরো পড়ুন: সব সময়ে নিজের সঙ্গে কথা বলেন! সাবধান, বড় বিপদ আসতে পারে)
দাতব্য: কোরবানির পাশাপাশি এই দিন দরিদ্রদের দান করার মাধ্যমে ইদ পালন করেন মুসলিমরা।
পোশাক: এই দিন সাদা কুর্তা পাজামাতে সেজে ওঠেন মুসলিম পুরুষরা। মহিলারাও সেজে ওঠেন ঝলমলে পোশাকে।
প্রসঙ্গত, এই দিনটি মুসলিমদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন কারণ এই দিনে বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারদের সঙ্গে তারা মিলিত হন। এই শুভ দিনে সকলের সঙ্গে আনন্দ উদযাপন করাই হলো বকরি ইদের প্রধান উদ্দেশ্য। সব থেকে বড় কথা, এই দিন ঈশ্বরকে স্মরণ করে বলি দেওয়ার মাধ্যমে মুসলিমরা ঈশ্বরের আরো কিছুটা কাছাকাছি আসতে চান, যেমন এসেছিলেন ইব্রাহিম।