মধ্যপ্রদেশের শেওপুর জেলার কুনো ন্যাশনাল পার্কে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে আফ্রিকান চিতাদের দেখা পাওয়া যাবে। ১৯৫২ সালে চিতাগুলিকে ভারতে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। ৭০ বছর পর দেশের মাটিতে চিতা ফিরে এল।
কিন্তু কীভাবে বিলুপ্ত হয়েছিল এই চিতা? কী তার ইতিহাস?
কথিত আছে, ১৯৪৮ সালে দেশের শেষ তিনটি চিতা শিকার করেছিলেন ছত্তিশগড়ের সুরগুজা রাজ্যের মহারাজা রামানুজ প্রতাপ সিংদেব। আর তখন থেকে ভারতে চিতা দেখা যায়নি।
তথ্য অনুসারে, মহারাজ রামানুজ প্রতাপ সিংদেব শিকারের খুব পছন্দ করতেন। তিনি বাঘ, চিতাবাঘ, হরিণ, চিতা, হরিণের মতো অনেক প্রাণী শিকার করেছিলেন। যার সাক্ষ্য আজও রামানুজ প্রাসাদের দেওয়ালে দেখা যায়।
১৯৪৮ সালে, রামানুজ প্রতাপ সিংদেব বৈকুণ্ঠপুর সংলগ্ন গ্রামের কাছে একটি জঙ্গলে শিকার করতে যান। কারণ গ্রামবাসী বন্য পশুর আক্রমণের কথা বলেছিলেন।
কথিত আছে যে, গ্রামবাসীরা রামানুজ প্রতাপ সিংদেবের কাছে বন্য প্রাণীর কথা জানান। এরপর মহারাজ শিকারে যান এবং তিনি একসঙ্গে তিনটি চিতাকে হত্যা করেন। শিকার করা তিনটি চিতা পুরুষ ছিল এবং সম্পূর্ণ প্রাপ্তবয়স্ক ছিল না। প্রথা অনুযায়ী, মহারাজ তিনটি মৃত চিতার সঙ্গে বন্দুক হাতে নিজের ছবি তোলেন। মনে করা হয় যে, এই তিনটি চিতাই ছিল ভারতের শেষ চিতা এবং এর পরে আর কখনও ভারতে চিতা দেখা যায়নি।
যখন আবার ভারতে চিতা ফিরে এল, তখন হঠাৎ করেই ভারতে মহারাজা রামানুজ প্রতাপ সিংদেবের শেষ চিতা শিকারের কথা আবারও শিরোনামে উঠে এসেছে। যখন মিডিয়া রিপোর্টে মহারাজা রামানুজ প্রতাপ সিংকে ভারতের শেষ চিতাদের হত্যাকারী হিসাবে দেখানো হয়েছিল, তখন তাঁর বংশধর অম্বিকা সিংদেব এতে বিরক্তিও প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে অম্বিকা সিংদেব বলেন, এটা অবশ্যই সত্য যে প্রতাপ সিংদেব চিতা শিকার করেছিলেন। কিন্তু তিনি যে দেশের শেষ চিতাদেরই শিকার করেছিলেন তার কোনও সরকারি প্রমাণ নেই। তবে অম্বিকা জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছ থেকে চিতা শিকারের পুরনো গল্প শুনেছেন।
রামানুজ প্রতাপ সিংদেবের ছেলে রামচন্দ্র সিংদেবও বিশ্বাস করতেন যে, সেই চিতা শিকারের ঘটনার পরে আরও আড়াই-তিন বছর তিনি চিতা দেখেছিলেন একই এলাকায়। তিনি বলেছিলেন, যে চিতাগুলি শিকার করা হয়েছিল, তারা পুরোপুরি প্রাপ্তবয়স্ক ছিল না, তাহলে কেন সেই চিতার বাবা-মাকে বনে পাওয়া গেল না।
এই যুক্তি এবং পালটা যুক্তির মধ্যেই চলছে চিতা ফিরিয়ে আনা উদ্যাপনের বিষয়টি।