করোনা কোথা থেকে এল? অন্য প্রাণীর শরীর থেকে মানুষের শরীরে এল? নাকি মানুষের শরীর থেকে অন্য প্রাণীর শরীরে গিয়ে করোনার জীবাণু বিবতর্ন ঘটালো? এই সব প্রশ্ন গত ২ বছরে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। আর তাই গুরুত্ব বেড়েছে Zoonotic Studies-এর।
কী এই Zoonotic Studies? মানুষের থেকে অন্য প্রাণীদের শরীরে সংক্রমণ ছড়ানো এবং অন্য প্রাণীদের শরীর থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমণ আসার এই দ্বিমুখী গতি নিয়ে যে চিকিৎসাবিজ্ঞানের যে শাখা আলোচনা করে তাকে বলে Zoonotic Studies।
এটি আরও বেশি করে গুরুত্ব তাঁদের জন্য, যাঁদের বাড়িতে পোষ্য আছে। বিশেষ কুকুর বা বিড়ালের মতো পোষ্যরা করোনাকালে বাড়ির মানুষ সদস্যদের থেকে কতটা নিরাপদ? এই সব নিয়ে কাজ করে চলেছেন রাজ্যের প্রাণীচিকিৎসকরা। আর এই বিষয়টিই উঠে এল ওয়েস্ট বেঙ্গল ভেটেরিনারি অ্যালামনি অ্যাসোসিয়েশনের ২১তম দ্বিবার্ষিক রাজ্য সম্মেলনের প্রতীকী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে।
আগামী দিনে রাজ্যে প্রাণী চিকিৎসার ধারা কোন দিকে এগোবে, কীভাবে রাজ্যে প্রাণী চিকিৎসার ক্ষেত্রে উন্নত পরিকাঠামো দেওয়া যাবে— সে বিষয়টিও স্পষ্টভাবে উঠে এল এই অনুষ্ঠানে।

১৩ ফেব্রুয়ারি ওয়েস্ট বেঙ্গল ভেটেরিনারি কাউন্সিলের প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত হল এই প্রতীকী উদ্বোধন অনুষ্ঠান। রাজ্যে প্রাণীবিজ্ঞান এবং তার চিকিৎসার ধারা কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সে বিষয়ে পর্যালোচনা করলেন চিকিৎসক শুভেন্দু হালদার। ওয়েস্ট বেঙ্গল ভেটেরিনারি অ্যালমনি অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক শুভেন্দুবাবু স্পষ্ট করে দিলেন, আগামী দিনে সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কীভাবে এ রাজ্যের প্রাণীচিকিৎসা এগোতে পারে, এবং কীভাবে অতিমারির মতো কঠিন পরিস্থিতিতে প্রাণীবিজ্ঞানকে আরও কাজে লাগানো যেতে পারে। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎসবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক চঞ্চল গুহ এবং প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক পূর্ণেন্দু বিশ্বাস। ছিলেন প্রাণীসম্পদ দফতরের অধিকর্তা চিকিৎসক যোগরাজ তামাং, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গৌতম হালদারের মতো বিশিষ্ট অতিথিরা।

আগামী দিনে এই সংগঠন কীভাবে কাজ করবে তার রূপরেখাও আঁকা হল সকলের উপস্থিতিতেই। রাজ্যে এই মুহূর্তে প্রাণী চিকিৎসা ও প্রাণী বিজ্ঞানের উন্নতি হচ্ছে অতি দ্রুত। আগামী দিনে এই উন্নতির দিকে আরও এগোনোর উদ্দেশ্যে অতিথিরাও আশ্বাস দিলেন সংগঠনের পাশে থাকার।

করোনাকালে শুধু মানুষেরই নয়, প্রাণীচিকিৎসার ক্ষেত্রে নানা ধরনের প্রতিকূলতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে প্রাণীচিকিৎসার পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেই সরকারি উদ্যোগে এবং চিকিৎসকদের তৎপরতায় এই ক্ষেত্রটি রীতিমতো সচল থেকেছে। সেই সব কথাও উঠে এল এদিনের অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানটিতেও করোনাবিধি পুরোপুরি মানা হল। ১৫ এবং ১৬ এপ্রিল দীঘায় এই সম্মেলনের মূল অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হবে। সেটিও আরও একবার জানিয়ে দেওয়া হল এই মঞ্চ থেকে।