হাই ব্লাড প্রেসার এখন ভীষণ সাধারণ একটি রোগ, যা একটি বয়সের পর প্রায় প্রত্যেক মানুষের হয়ে থাকে। হাই ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সারা জীবন ওষুধ খেয়ে প্রেসার কন্ট্রোলে রাখতে হয়। ব্লাড প্রেসার বেড়ে গেলেই হার্ট অ্যাটাক, ব্রেন স্ট্রোকের মত ঘটনা ঘটতে পারে।
হাই ব্লাড প্রেসার কী?
হাই ব্লাড প্রেসার হলো এমন একটি শারীরিক অবস্থা যখন আপনার রক্তনালীতে প্রচন্ড পরিমাণে চাপ সৃষ্টি হয়। রক্তনালীতে চাপ সৃষ্টি হলে হৃদপিন্ডে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয় ফলে হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। দৈনন্দিন জীবনে স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া করার মাধ্যমে হাই ব্লাড প্রেসারকে কন্ট্রোলে রাখা যায়।
উচ্চ রক্তচাপকে কেন বলে নীরব ঘাতক?
সাধারণ ভাবে হাই ব্লাড প্রেসারের কোনও নির্দিষ্ট লক্ষণ থাকে না। তেমন কোনও নির্দিষ্ট লক্ষণ থাকে না বলেই হাই ব্লাড প্রেসার আপনার শরীরে নীরবে ক্ষতি করতে পারে। শরীরের বেশ অনেকটাই ক্ষতি হয়ে যাবার পর মানুষ বুঝতে পারে তার হাই ব্লাড প্রেসারের সমস্যা রয়েছে, তাই উচ্চ রক্তচাপকে বলা হয় ‘নীরব ঘাতক’।
উচ্চ রক্তচাপের ৭ টি গোপন লক্ষণ
মাথাব্যথা: যদি ঘনঘন মাথা ব্যথা হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনার হাই ব্লাড প্রেসারের সমস্যা রয়েছে। মাথা ব্যথার সমস্যা যদি বেশ কয়েকদিন যাবত একটানা থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
দৃষ্টিশক্তি সমস্যা: উচ্চ রক্তচাপ চোখের নালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে দেয় ফলে আপনার যদি হাই ব্লাড প্রেসার থাকে তাহলে আপনার দেখতে অসুবিধা হতে পারে। কোনও কিছু দেখতে অসুবিধা হওয়া অথবা কোনও কিছু যদি দ্বিগুণ দেখতে পান আপনি, তাহলে বুঝতে হবে আপনার হাই ব্লাড প্রেসার রয়েছে। বহুদিন ধরে শরীরে হাই ব্লাড প্রেসার থাকলে তা রেটিনার ক্ষতির কারণ হতে পারে যাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি।
নাক দিয়ে রক্ত পড়া: নাক দিয়ে রক্ত পড়ার অন্যতম কারণ হতে পারে শরীর গরম হয়ে যাওয়া। তবে আপনার যদি ক্রমাগত নাক দিয়ে রক্ত বের হয়ে থাকে তাহলে আপনার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে নাকের ছোট ছোট রক্তনালীগুলি সহজে ফেটে যায় ফলে নাক দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে ঘনঘন।
শ্বাসকষ্ট: হাই ব্লাড প্রেসার থাকলে হৃদপিণ্ড সহজে পাম্প করতে পারেনা ফলে স্বাস নিতে অসুবিধা হয়। হাই ব্লাড প্রেসার হলে সামান্য পরিশ্রম করলেও আপনার হতে পারে শ্বাসকষ্ট।
ক্লান্তি: হাই ব্লাড প্রেসারের ফলে মস্তিষ্ক এবং শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিতে অক্সিজেন এবং পুষ্টি সঠিকভাবে পৌঁছয় না ফলে অল্প কাজ করলেই আপনার শরীরে দেখা দেয় ক্লান্তি। সামান্য কাজ করেই যদি ক্লান্তি অনুভূত হয় তাহলে রক্ত পরীক্ষা করে নেওয়া প্রয়োজন।
অনিয়মিত হৃদস্পন্দন: অনিয়মিত অথবা দ্রুত হৃদস্পন্দনের অন্যতম কারণ হতে পারে উচ্চ রক্তচাপ। একে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় অ্যারিথমিয়া। এই সমস্যার কারণে হৃদপিণ্ড রক্ত পাম্প করতে পারে না সঠিকভাবে ফলে মাঝে মধ্যেই হার্টবিট অনিয়মিত হয়ে যায়।
কিডনির সমস্যা: শুধু হার্ট না, হাই ব্লাড প্রেসার থাকলে হতে পারে কিডনির সমস্যা। তাই কিডনির সমস্যার জন্য শুধুমাত্র পেটকে দোষ দিলে হবে না, একবার হলেও করিয়ে নিতে হবে রক্ত পরীক্ষা।