বিকেলের আলো পড়ে এসেছে। ভাবছেন বাগানের ধারে একটু হাঁটবেন। কিন্তু শান্তিতে হাঁটার জো নেই। মশার কামড়ে সারা শরীর জ্বলছে। অথচ পাশের মানুষটাকে দেখুন! তাঁকে মশা ছুঁয়েও দেখছে না। যেন মশাদের কাছে তিনি অদৃশ্য!
এমন ঘটনার মুখোমুখি আমাদের অনেককেই হতে হয়। কাউকে মশা বেশি কামড়ায়, কাউকে কম, আবার কাউকে একেবারেই নয়। কিন্তু এর কারণ কী? অনেকে বলেন, কার শরীর থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড কতটা বেরোচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে মশার কামড় কতটা খেতে হবে। কারও মতে, জামাকাপড়ের রং কী, তার ওপর নির্ভর করে মশার কামড়। কিন্তু এগুলোই কারণ? নাকি অন্য কিছু।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মশার কামড় কাকে বেশি খেতে হবে, কাকে কম— তা নির্ভর করে দুটো বিষয়ের ওপর। এক, গায়ের স্বাভাবিক গন্ধ। দুই, জিনের গড়ন।
মশাদের মধ্যে শুধুমাত্র স্ত্রী মশারাই কামড়ায়। কারণ ডিম তৈরির জন্য যে প্রোটিনের প্রয়োজন হয়, তা তারা রক্ত থেকে সংগ্রহ করে। কীভাবে তারা তাদের শিকারের সন্ধান পায়, তা থেকেই বোঝা যায় মশা কাকে বেশি কামড়াবে।
স্ত্রী মশাদের বিশেষ ঘ্রানেন্দ্রিয় থাকে। এটি কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং গায়ের গন্ধ টের পায়। তার অর্থ যাঁরা বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমণ করেন, তাঁদের গায়ের গন্ধ টের পেলে মশা সেদিকে ছুটে যায়। কারা বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন করেন?
- যাঁদের ওজন বেশি, তাঁদের শরীর থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেশি নির্গত হয়। ফলে তাঁদের মশা বেশি কামড়ায়।
- অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদেরও মশার কামড় বেশি খেতে হয়। কারণ তাঁদের শরীর থেকেও বেশি মাত্রায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড বেরোয়।
- এছাড়াও দেখা গিয়েছে, এক্সারসাইজ বা প্রচণ্ড পরিশ্রমের পরেও মশার কামড় বেশি খেতে হয়। তার কারণ কায়িক পরিশ্রম বেশি হলে ঘামের সঙ্গে ল্যাকটিক অ্যাসিড বেরোতে থাকে। তার সঙ্গে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে। ফলে মশা সহজে তাঁদের উপস্থিতি টের পায় এবং ছুটে আসে।
- জিনগত কারণও রয়েছে মশার কামড় খাওয়ার পিছনে। জিনগত কারণে কারও কারও ত্বকে এমন কিছু রাসায়নিকের ক্ষরণ হয়, যাতে মশা তাঁদের অস্তিত্ব সহজে বুঝতে পারে।
- এছাড়াও ও গ্রুপের রক্তের মানুষকে মশা বেশি কামড়ায়। এ গ্রুপের রক্তের মানুষকে সবচেয়ে কম। এমনই বলছে বিভিন্ন পরিসংখ্যান।