২০২১ সালের গোড়ায় যখন ডেল্টা সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিয়েছিল, তখন যাঁরা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, অনেকেরই সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে। কিন্তু গত বছরেরই শেষে এসে যখন ওমিক্রন বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করে, তখন খুব বেশি মানুষকে তার কারণ হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি। এমনকী খুব বেশি সমস্যাতেও পড়েননি বেশির ভাগ আক্রান্তই।
এর কারণ কী? কেন ওমিক্রন ডেল্টার তুলনায় কম সমস্যা সৃষ্টি করল? এর পরে করোনার অন্য যে রূপগুলি আসতে পারে, সেগুলিতেও কি একই রকম ভাবে সমস্যার পরিমাণ আরও কমে যাবে?
এই প্রশ্নগুলি ঘুরছে অনেকের মনেই। হালে একট গবেষণা এর উত্তর দিয়েছে। সম্প্রতি University of Kent এবং the Goethe University Frankfurt-এ তরফে একটি গবেষণা চালানো হয়েছে। সেখানে ওমিক্রনের সমস্যা কম থাকার পিছনে বিজ্ঞানীরা দু’টি কারণ বলেছেন।
- বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এর পিছনে রয়েছে মানুষের রোগ প্রতিরোধ শক্তির মধ্যে থাকা একটি বিশেষ ব্য়বস্থা এই ওমিক্রনকে দারুণভাবে আটকাতে পারছে। করোনার আগের রূপগুলির ক্ষেত্রে সেটি হয়নি। কোনও কোষে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটাতে গেলে Interferon নামের প্রোটিন সেটি প্রতিরোধ করে। এটি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার অন্যতম উপাদান। এমনই একটি Interferon ওমিক্রনকে আটকে দিয়েছে। এই Interferon-টি সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের জানা ছিল না।
- আরও একটি কারণের কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের কথায়, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বেশ কিছু ওষুধ রয়েছে। কিন্তু তার কোনওটাই ডেল্টা আটকাতে বিশেষ কার্যকর হয়নি। কিন্তু ওমিক্রনের ক্ষেত্রে এই ধরনের ৮টি ওষুধ রয়েছে। সেগুলির অধিকাংশই ওমিক্রনকে ভালোভাবে আটকেছে।
তাহলে কি করোনার পরের রূপগুলির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে?
এমন কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, পুরোটাই নির্ভর করছে ভাইরাসটি মিউটেশনের উপর। করোনাভাইরাস নিজেকে কতটা বদলাবে, তার উপর নির্ভর করবে পরের রূপগুলি আমাদের কতটা কাবু করতে পারবে।