অনেকের কাছে শীত বেশ প্রিয় ঋতু হলেও হঠাৎ করে পারদ নেমে যাওয়ার কারণে এর জন্য নানারকম সমস্যার মধ্যেও পড়তে হয়। ইদানিং কিছুদিন ধরেই চলছে প্রচন্ড ওঠানামা করছে পারদ। তাপমাত্রা এই কমছে তো এই বাড়ছে। প্রতিবছর এই সময়টা চিকিৎসকদের চেম্বারে সর্দিকাশি ও জ্বরে আক্রান্ত রোগীর ভিড় লেগে থাকে। বিশেষজ্ঞদের কথায়, হঠাৎ করেই তাপমাত্রা কমে আসার ফলে শরীর সহজে মানিয়ে নিতে পারে না। তাই শীত পড়তেই ফুসফুসে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে থাকে। যাদের ফুসফুসের ক্রনিক রোগ রয়েছে, তাদের জন্য এই ঋতু একরকম বিপদের সামিল।
চিকিৎসকদের কথায়, অ্যাজমার রোগীদের রোগলক্ষণগুলি অন্য সময় নিয়ন্ত্রণে থাকলেও শীতকালে প্রায়ই তা লাগাম ছাড়া জটিলতা তৈরি করে। অ্যাজমা রোগীরা আগে থেকে সতর্ক না হলে এর জন্য মারাত্মক সমস্যাও হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে রোগীদের হাসপাতালের ভর্তি করতেও হয়।
চিকিৎসক অর্জুন খান্নার কথায়, শীত পড়তেই উষ্ণতা কমে যায় বলে একাধিক ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই সময় নিয়মিত ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এলে ফুসফুসের সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় থাকে। আগে থেকে রয়েছে এমন রোগ যেমন মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, তেমনই নতুন নতুন রোগ দেখা দিতে থাকে। তাঁর কথায়, অ্যাজমা হলে ফুসফুসের বায়ু চলাচলের পথগুলিতে প্রদাহ হয়। এই সমস্যায় বায়ুপথ (ব্রঙ্কিওল টিউবস) সরু হয়ে আসে। উপসর্গ হিসেবে হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা দেয়। ঠান্ডা বাতাস লাগলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
অ্যাজমা হলে ফুসফুসের ব্রঙ্কিওলের পথগুলি এমনিতে স্বাভাবিক আকারের চেয়ে সরু থাকে। তার উপর নিয়মিত ঠান্ডা পরিবেশে থাকলে বা কাজ করতে হলে তা আরও সরু হয়ে যায়। কিছু বায়ুপথ একেবারে বন্ধও হয়ে যায়। চিকিৎসক খান্নার কথায়, কিছু সময় অ্যালার্জি থেকেও অ্যাজমার সমস্যা দেখা দেয়। ঠান্ডা বাতাসের কারণে হঠাৎ করে বায়ুপথগুলিতে হিস্টামিনের উৎপাদন বেড়ে যায়। এটিই অ্যালার্জিকে ডেকে আনে।
এর থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য বেশ কয়েকটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার কথাও জানাচ্ছেন চিকিৎসক খান্না। প্রতিবছরই শীতের সাধারণ রোগ ফ্লু-এর জন্য টীকা তৈরি করা হয়। এই টীকা নিয়ে নিজেকে আগে থেকেই সুরক্ষিত রাখা যেতে পারে। এছাড়া, বাইরে ঠান্ডা বাতাসে যতটা কম বেরোনো যায় ততই ভালো। কারণ এই বাতাসই নিশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে পৌঁছে নানারকম বিপত্তি ডেকে আনে।