শীতকাল এলেই ত্বকের আর্দ্রভাব উধাও হতে থাকে। ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়। এছাড়া, ত্বক জ্বালা থেকে লাল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে থাকে। বর্তমান সময়ে দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ত্বকের সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সময় ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য নানারকম স্কিন কেয়ার দ্রব্যের সাহায্য নিতে হয়। তার সবকটি থেকে যে সুফল মেলে তেমনটা নয়। অনেক স্কিন কেয়ার দ্রব্য ব্যবহারের ফলে ত্বকের আরও ক্ষতিও হয়। তবে, আয়ুর্বেদের সাহায্য নিলে এমন ঘটনা সহজেই এড়ানো যায়। একইসঙ্গে এড়ানো যেতে পারে শীতকালে ত্বকের রুক্ষ হয়ে যাওয়ার ঘটনা।
এলইডব্লিউএফ-এর আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডাঃ লক্ষ্মী ভার্মা আয়ুর্বেদের তেমনই কিছু উপায় বাতলে দিলেন এইচটি ডিজিটালের লাইফস্টাইল বিভাগকে। এই উপায়গুলো মেনে চললে শীতে সহজেই ত্বকের ক্ষতি আটকানো যেতে পারে।
আয়ুর্বেদ হল জীবনের বিজ্ঞান। কোন ঋতুতে কীভাবে ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত, সবকিছুরই হদিশ আছে এই শাস্ত্রে। বিভিন্ন উপায়ের মধ্যে খোঁজ রয়েছে স্নানের জন্য ওষুধযুক্ত পাউডার, ত্বক ভালো রাখার তেল ও বিভিন্ন প্রসাধনী মিশ্রণের। শাস্ত্রমতে, অভ্যাঙ্গ বা তেল মালিশ শীতের সময় রোজকার রুটিন হওয়া জরুরি। এটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ত্বককে আর্দ্র রাখে। পাশাপাশি এটি ত্বকের আচ্ছাদন হিসেবেও কাজ করে। সাধারণত দূষণের কারণে রোমকূূূূূূূপে ময়লা জমে ত্বকের ক্ষতি করে। আয়ুর্বেদিক তেল মালিশের ফলে এই ধুলোবালির থেকে ত্বককে রক্ষা করা যায়।
শীতে ত্বককে পরিস্কার রাখার জন্য আয়ুর্বেদে রয়েছে বেশ কয়েকটি স্নানের প্রসাধনের খোঁজ। এই প্রসাধনগুলো মূলত অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণের জন্য বিখ্যাত। পাশাপাশি ত্বকের মধ্যে থাকা টক্সিক পদার্থ নাশ করতেও সাহায্য করে। এগুলো মূলত তৈরি হয় নিম, হলুদ,বিচ গাছের ছাল, দারুচিনি গাছের ছাল, ত্রিফলা ইত্যাদি থেকে। এমন একটি স্নানের প্রসাধনের উদাহরণ সিদ্ধার্থক স্নান চূর্ণ। এগুলোর পাশাপাশি স্নানের পর ত্বককে রক্ষা করতে বিভিন্ন সুগন্ধি মিশ্রণের খোঁজও রয়েছে শাস্ত্রে। ত্বকের উপর এই মিশ্রণ প্রয়োগের পদ্ধতিকে বলে অনুলেপন। আগারু, কুমকুম ইত্যাদি শীতে শুকিয়ে যায় না বলে এগুলো দিয়ে তৈরি হয় অনুলেপন।
শীতের সময় কাপড়গরম রাখাও জরুরি। কাপড় ঠিকমত না শুকালে তাতে আর্দ্রভাব থেকে যায়। এর থেকে ত্বকে ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল আয়ুর্বেদিক উপকরণ দিয়ে ধূপণ প্রক্রিয়ায় কাপড় শুষ্ক ও উষ্ণ রাখা যায়।