আর জি কর হাসপাতালের মর্মান্তিক ঘটনার কথা এতক্ষণে কমবেশি অনেকেই জানেন। চেস্ট মেডিসিন বিভাগে স্নাতকোত্তর বিভাগের পড়ুয়ার মৃতদেহ মেলে শুক্রবার। তাঁর শরীরে মিলেছে একাধিক ক্ষত চিহ্ন। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাঁকে।
এবার আর জি করের ঘটনায় মুখ খুলেছেন রাজ্যমহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ও তথা বহু বাংলা সিরিয়ালের লেখিকা, পরিচালক, প্রযোজক লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। টিভি৯ বাংলাকে লীনা বলেন, ‘গতকালই (শুক্রবার) গিয়েছিলাম, দেখলাম তদন্ত চলছে, মনে তো হল না কোনও ত্রুটি রয়েছে বলে। একটাই কথা বলতে চাই, মৃতার পরিবারের পাশে রয়েছে রাজ্যের মহিলা কমিশন।’ লীনার কথায়, তাঁদের কাজই তদন্তে ঠিক করে চলেছে কিনা সেটা দেখা, তাঁরা সেটা করেছেন। তবে তদন্ত ঠিকই হচ্ছে। পুলিশের কাছ থেকে তাঁরা রিপোর্ট চেয়েছেন বলেও জানান লীনা।
লীনা জানান, তাঁরা মৃতার পরিবারের সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা করেছেন, তবে তাঁরা কেউই কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না। তবে তাঁরা মৃতার বাড়িতে যাবেন বলে ঠিক করেছেন বলেও জানান।
হাসপাতাল চত্ত্বরে নিরাপত্তা নিয়ে ওঠা প্রশ্নে লীনা বলেন, ‘যদি সত্যিই প্রমাণিত হয়, ঘটনাটা হাসপাতাল চত্ত্বরে ঘটেছে, তাহলে নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠবেই। তাহলে আরও সজাগ থাকতে হবে।' লীনা মনে করছেন, আসলে মানুষ এখন বড়ই অস্থির। আর সেকারণেই নৃশংসতার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ছোটবেলা থেকেই বিষয়গুলির কাউনসেলিং প্রয়োজন। ছোটথেকেই বিষয়গুলি পাঠ্য বই-এর অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
তবে এরাজ্যে কি তবে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে? এবিষয়ে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'এরাজ্যের মহিলারা নিরাপদেই ছিলেন, আমি নিজেও এরাজ্যে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। অনেক মহিলাকে চিনি, যাঁরা সাধারণ ১০-৫টার চাকরি নয়, সময়সীমার ঠিক নেই এমন কাজকর্ম করেন। তবে এখন দেখছি অনেকজায়গায় নিরাপত্তার অভাব ঘটছে। মহিলাদের এবার অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে। পরিবেশ নিয়ে ওয়াকিবহাল হতে হবে। মহিলারা এখন কোথায় থাকবেন, তা নিয়ে অনেকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে, এটা হওয়ার কথা নয়। নিজের কর্মক্ষেত্রের পরিধিতে যদি এটা ঘটে তাহলে চিন্তা প্রশ্ন উঠবেই। প্রশাসনকে অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। দায়িত্ব নিতে হবে।'
তবে লীনা আরও বলেন, ‘তার মানে অবশ্য এই নয়, যে আজ থেকে রাজ্যে সব মহিলারা বিপদের মুখে পড়ে গেলেন। তবে এমন কিছু ঘটলে শক্ত হাতে হাল ধরতে হবে।’