করোনা থেকে বাঁচার সেরা রাস্তা ভ্যাকসিন নেওয়া। এমন কথা অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা। টিকাকরণের হারও মোটামুটি ভালো। কিন্তু এই টিকার কি কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে? এই প্রশ্ন অনেকের মনেই রয়েছে। এখনও পর্যন্ত খুব ছোটখাটো কয়েকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া গেলেও, কোনওটি বিশেষ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি।
কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই অনেক মহিলার মনে একটা প্রশ্ন ছিল— করোনার টিকা কি পিরিয়ডসের নির্দিষ্ট সময় বদলে দিতে পারে? তেমন কথা বলছে, হালের এক সমীক্ষা।
‘অবস্ট্রেটিক্স অ্যান্ড গাইনিকোলজি’ নামক জার্নালে হালে প্রকাশিত হয়েছে সমীক্ষার রিপোর্টটি। সেখানে বলা হয়েছে, অনেক মহিলাই এমন অভিযোগ করেছেন— টিকা নিলে নাকি বদলে যাচ্ছে ঋতুচক্রের সময়। গবেষকর জানিয়েছেন, ঋতুচক্রে কিছু কিছু বদল দেখা গিয়েছে অনেকের ক্ষেত্রে:
- কারও কারও নির্দিষ্ট সময়ের পরে পিরিয়ডস শুরু হচ্ছে।
- কারও কারও ক্ষেত্রে অন্য বারের তুলনায় বেশি রক্তপাত হচ্ছে।
- কেউ কেউ বলেছেন, মেনোপজের এক বছর পরে হঠাৎ করে পিরিয়ডস হয়েছে।
ঠিক কতটা সমস্যা হচ্ছে এর ফলে? চিকিৎসকরা বলছেন, এই সমস্যা খুব বড় কিছু নয়। মোটের উপর এক বা দু’দিন পিছোতে পারে পিরিয়ডসের তারিখ। তাও সেটি হচ্ছে টিকার দু’টি ডোজ নেওয়ার পরেই। অর্থাৎ, যাঁদের ২৮ দিনের মাথায় পিরিয়ডস হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে ২৯ বা ৩০ দিনের মাথায় পিরিয়ডস হচ্ছে।
এই সমস্যা কত দিন পর্যন্ত চলতে পারে? হালের এই সমীক্ষাটিতে তারও উত্তর পেয়েছেন চিকিৎসকরা। বলছেন, দ্বিতীয় ডোজটি নেওয়ার দু’-তিন মাস পর্যন্ত চলতে পারে এই সমস্যা। তার পরে আস্তে আস্তে কেটে যায় এটি।
চিকিৎসকদের মতে, ঋতুচক্রে সামান্য বদল আসতে পারে কোভিডের টিকা নেওয়ার পরে। কিন্তু তার মানে এই নয়, টিকা নেওয়া বন্ধ করতে হবে। কারণ কোভিড থেকে বাঁচতে এটাই সবচেয়ে ভালো রাস্তা। আর টিকার এই প্রভাব শুধু ঋতুচক্রের উপরেই পড়ছে, সন্তান ধারণ বা সন্তানের জন্মের ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব পড়ছে না। সে আশ্বাসও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।