করোনা নানাভাবে মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে। কর্মক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়েছে বিরাট আকারে। করোনার কারণে বেড়েছে বাড়ি থেকে কাজের পরিমাণ। আর তার ফলে বেড়েছে অন্য ধরনের নানা অভ্যাস। এর মধ্যে অন্যতম হল পর্নোগ্রাফি দেখা।
হালের এক সমীক্ষা বলছে, বাড়ি থেকে যাঁরা অফিসের কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে পর্নোগ্রাফির প্রতি নেশা মারাত্মক হারে বেড়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র ইংল্যান্ডে সমীক্ষা চালিয়েই এটি দেখা গিয়েছে। সমীক্ষাকারী সংস্থার তরফে বলা হয়েছে। সারা বিশ্ব জুড়েই এই প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কেমন হারে বেড়েছে এই প্রবণতা?
দেখা গিয়েছে, বাড়ি থেকে অফিসের কাজের সময়ে ফাঁকে ফাঁকে একটু সময় পেলেই পর্নোগ্রাফি দেখছেন কেউ কেউ। হয়তো তাতে অফিসের কাজে প্রভাব পড়ছে না। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে অনেকের ক্ষেত্রেই।
কী পরিমাণে এই প্রবণতা বেড়েছে, তার উদাহরণ দিতে গিয়ে সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ডে এমন ব্যক্তি রয়েছে, যিনি অফিসের কাজের ফাঁকে পর্নোগ্রাফি দেখছেন, কাজের শেষে দেখছেন, ঘুমোতে যাওয়ার আগে দেখছেন। সব মিলিয়ে দিনের মাথায় প্রায় ১৪ ঘণ্টাও কেউ কেউ কাটিয়ে দিচ্ছেন পর্নোগ্রাফি দেখে। এই সমস্যা আগে যাঁদের মধ্যে ছিল, তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বড় আকার নিয়েছে। তাঁদের ক্ষেত্রে এটির প্রবণতা মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে গিয়েছে।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এর আগে অনেকেরই পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্তি ছিল। কিন্তু সময়ের অভাবে বা স্থানের অভাবে তা দেখার সুযোগ হত না। এখন সেই প্রাইভেসির অভাব কমেছে। ফলে অফিসের কাজ সেরে রাতে বাড়ি ফিরে নয়, এখন সারা দিনই নিজের ইচ্ছামতো এই জাতীয় ভিডিয়ো দেখার সুযোগ পাচ্ছেন কেউ কেউ।
কেন এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা?
তাঁরা জানিয়েছেন, পর্নোগ্রাফি দেখার অভ্যাস এক ধরনের নেশার মতোই। এটি দেখার সময়ে শরীর বেশ কিছু হরমোনের ক্ষরণ হয়। আর সেটি এই ধরনের ভিডিয়ো দেখার প্রতি নির্ভরশীলতা তৈরি করে। এটি একবার তৈরি হয়ে গেলে তা স্বাভাবিক যৌনজীবনের ক্ষতি করতে পারে। অন্য ব্যক্তির প্রতি শারীরিক আকর্ষণ পুরোপুরি চলে যেতে পারে কারও।
লন্ডনের বিভিন্ন মনোবিদদের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে এই রিপোর্ট তৈরির সময়ে। তাঁরাও জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের পর থেকে পর্নোগ্রাফির প্রতি আসক্তি মারাত্মকভাবে বেড়ে গিয়েছে অনেকের। আগে যে সংখ্যায় মানুষ এই সমস্যা নিয়ে হাজির হতেন তাঁদের কাছে, এখন তাঁর চেয়ে বেশ কিছুটা বেশি পরিমাণে মানুষ হাজির হন এই সমস্যা নিয়ে।