৩ ডিসেম্বর ওয়ার্ল্ড ডিসেবল ডে। আর এই বিশেষ দিনটিকে উদযাপন করতে, সকলকে আরও একবার বুঝিয়ে দিতে যে বিশেষভাবে সক্ষম মানুষরা কোনও অংশে কম যান না তার জন্য জনসংস্কৃতি এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল এক অভিনব উদ্যোগ নিল। বিশেষভাবে সক্ষম মানুষরা অভিনয় করবেন সক্ষম মানুষদের সঙ্গে এক স্টেজে।
ভারতে এই প্রথমবার বিভিন্ন ধরনের বিশেষভাবে সক্ষম মানুষরা একসঙ্গে অভিনয় করবেন। আর গোটা নাটকটির পরিচালনা করছেন জনসংস্কৃতি নাট্যদলের সঞ্জয় গাঙ্গুলি, গ্রের জেনি সিলি এবং মাইন্ড দ্য গ্যাপের টিম হুইলার। এবং অন্যতম উদ্যোক্তা হিসেবে আছেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের ডিরেক্টর দেবাঞ্জন চক্রবর্তী।
একই মঞ্চে মূক-বধিরদের সঙ্গে থাকবেন দৃষ্টিহীন অভিনেতারা, থাকবেন চলৎশক্তিহীন আরেক অভিনেতা। তাঁদের সঙ্গ দেবেন অটিস্টিক অভিনেতাও। এই গোটা বিষয়টায় এমন এক অভিনেতা যুক্ত আছেন যিনি চোখে দেখতে পান না। কিন্তু তাঁর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে সাজিয়ে তোলেন নাটকের মঞ্চ। গত ২৬ বছর ধরে তিনি প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে নাটকের মঞ্চ কাঁপিয়ে চলেছেন। তাঁর নাম সুভাষ দে।
সুভাষ বাবু অন্যদেশ নামক একটি দলের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের এই দল দৃষ্টিহীন অভিনেতাদের নিয়েই তৈরি। তিনি এই দলের ডেপুটি ডিরেক্টর। চলতি বছর তিনি দিশা সম্মান পুরষ্কার পেয়েছেন দিশা আই হসপিটালের তরফে। তিনি গত এক বছর ধরে জনসংস্কৃতির সঙ্গে কাজ করছেন তাঁর দল নিয়ে সেই বিষয়ে তাঁর মত কী জানালেন নিজেই।
অভিনেতার কথায়, 'আমাদের দলে আমরা সবাই দৃষ্টিহীন, কিন্তু এই মঞ্চে একসঙ্গে দৃষ্টিহীন, মূক, বধির, অটিস্টিক, চলৎশক্তিহীন মানুষ রয়েছেন। ফলে সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করার আলাদাই অনুভূতি। সাময়িক ভাবে অসুবিধা তো হয়েছিল। কিন্তু ভালো লেগেছে যেটা এত বৈপরীত্য, এত সমস্যার মধ্যেই আমাদের সবার ভাষা একটাই হয়ে উঠেছিল আর সেটা হল থিয়েটারের ভাষা। থিয়েটার আমাদের সবাইকে জুড়ে রেখেছে।' তিনি আরও জানান, 'অনেক নতুন কিছু শিখতে পেরেছি। এটাও তো একপ্রকার শেখা, যে নিজের সমস্যার সঙ্গে অন্যের সমস্যা নিয়েও কী করে কাজ করতে হয়। কিন্তু বিশ্বাস করুন আমাদের প্রতিবন্ধকতার ছাপ কাজে পড়েনি।'
৩ ডিসেম্বর এই নাটক প্রথমবার মঞ্চস্থ হবে। সেই নিয়ে তিনি জানান যে তিনি দারুন উচ্ছ্বসিত। 'সমস্ত প্রতিবন্ধকতা ভাঙার নাটক আশা করি সবার ভালো লাগবে' মত অভিনেতার।