রণবীর ভট্টাচার্য
আজ বিশ্ব টেলিভিশন দিবস। প্রতি বছর আজকের দিনে গণমাধ্যম হিসেবে টেলিভিশনের ভূমিকা এবং কমিউনিকেশনের একটি উন্নত দিক হিসেবে আলোকপাত করা হয়ে থাকে। ১৯৯৬ সালের ১৭ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রপুঞ্জ সাধারণ অধিবেশনে এই বিশেষ দিনটির কথা ঘোষণা করে। ১৯২৭ সালে আমেরিকান ফিলো টেলর ফার্নসওয়ার্থের হাত ধরে সারা বিশ্ব প্রথম মুখোমুখি বিদ্যুৎ চালিত টেলিভিশনের। তারপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে কাতারে হওয়া বহু বিতর্কিত ফুটবল বিশ্বকাপ, টেলিভিশন তথা টিভির যাত্রা যেমন গুরুত্বপূর্ণ আবার রোমাঞ্চকর বটে।
তবে টিভির সেই গুরত্ব কি আর রয়েছে?
সাদা কালো টিভির জমানায় সবাই চমকে উঠেছিলেন যে স্যাটেলাইটের সাহায্যে দূর কতটা কাছের হতে পারে, তাও আবার চোখের নিমেষে। এছাড়া সংবাদপত্র পড়তে গেলে যে সাক্ষরতার বেড়াজাল থেকে থাকে, সেটিও উধাও। সব মিলিয়ে টিভি অচিরেই হয়ে উঠেছিল সামাজিক পরিচয়। এরপর কেবিল টিভির পর্দায় উষ্ণতার পারদ বাড়িয়েছিল একবারে অনেকটাই। কিন্তু নব্বইয়ের দশকের পর বদলাতে শুরু করল সবটাই আর তার মূলে মুঠো ফোন বা স্মার্ট ফোন। আজকের জানায় টিভিতে যা যা দেখা যায়, তা সবই দেখা সম্ভব ইন্টারনেট সংযোগসহ স্মার্ট ফোন। দামও আজ নিম্নবিত্তের সাধ্যের মধ্যে। শুধু শহর নয়, গ্রামেও আজ টিভির বিক্রি অনেক কমেছে।
আজকের টিভির বিবর্তন চোখে পড়ার মতো। আজ সেই পরিচিত এন্টেনার ঝক্কি নেই। টিভি হয়েছে পাতলা, অনেকটাই যেন প্রিন্টারের মত। কেবিল কানেকশন নয়, টিভি চলে ইন্টারনেটে। আজকের টিভি ক্যালন্ডারের মত দেওয়ালে ঝুলিয়ে রাখা চলে। আর মানুষের হাতে রয়েছে রিমোট, নিমেষে খবর থেকে সিনেমা কিম্বা খেলা দেখার সুযোগ রয়েছে। আজ বাজারের ফোর্ডের মত টিভি চ্যানেলের লম্বা লিস্ট, বেশিরভাগ মানুষেরই সব চ্যানেল দেখা হয়ে ওঠে না। সব মিলিয়ে টিভি বদলে দিয়েছে বিনোদনের পসরা। কিন্তু স্মার্ট দনের সাথে কি সে পেরে উঠছে? উত্তর অনেকের কাছেই পরিষ্কার।
এক সময়ে দুয়ারে মাধ্যমিক পরীক্ষার ভ্রুকুটি থাকলে টিভির কানেকশন কেটে দেওয়ার প্রবণতা ছিল। আর আজ টিভিতে মানুষের আসক্তি নেই, বরং মোবাইল লুকিয়ে রাখতে পারলে বোধহয় পরীক্ষার ফলাফল ভালো হবে!