ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর পর এবার ভারতে হানা দিল জিকা ভাইরাস। এই রোগটির পাদুর্ভাব মূলত দেখা যায় দক্ষিণ আমেরিকা, মেস্কিকো, ক্যারিবিয়ান এবং মহাদেশীয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তবে সম্প্রতি ভারতের কিছু অংশে ছড়িয়ে পড়েছে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ, যা সত্যি চিন্তার বিষয়।
জিকা ভাইরাস কী?
এটি মূলত এডিস প্রজাতির মশা বাহিত রোগ। এই মশা দিনের বেলায় সব থেকে বেশি সক্রিয় থাকে। এডিস অ্যালবোপিকটাস ও এডিস ইজিপ্টি এই দুই প্রজাতির মশা মূলত জিকা ভাইরাসের জন্য দায়ী।
জিকা ভাইরাসের ইতিহাস
১৯৪৭ সালের উগান্ডার বানরের মধ্যে প্রথম পাওয়া গিয়েছিল জিকা ভাইরাস। পরবর্তীকালে ১৯৫২ সালে উগান্ডা এবং তানজানিয়ার বাসিন্দাদের মধ্যেও এই রোগ দেখতে পাওয়া যায়। তারপর থেকে মূলত এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশের বহু দেশে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
(আরও পড়ুন: লম্বা চুল পেতে কী বারবার চুল ছেঁটে ফেলেন? আদৌ উপকার হয় কি)
জিকা ভাইরাসের লক্ষণ
জিকা ভাইরাসের মূল লক্ষণ গুলি হল জ্বর, জয়েন্টে ব্যথা, ফুসকুড়ি, কনজেক্টিভাইটিস, মাথা ব্যথা এবং পেশিতে ব্যথা। এই লক্ষণগুলি যদি এক সপ্তাহ বা বেশি সপ্তাহ ধরে শরীরে দেখা যায় তাহলে পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে আপনার শরীরে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি আছে কিনা।
জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ
মূলত গর্ভবতী মহিলা বা একদম ছোট শিশুদের জন্য এই ভাইরাস ভয়ংকর আকার ধারণ করতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে দীর্ঘকালীন মস্তিষ্কের সমস্যা দেখা দিতে পারে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের উপস্থিতি ভ্রুনের ক্ষতি বা অকাল জন্মের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। প্রাপ্তবয়স্ক বা বয়স্কদের মধ্যে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি থাকলে তাদের স্নায়বিক ব্যাধি হতে পারে।
কীভাবে সাবধান থাকবেন আপনি?
যেহেতু জিকা ভাইরাস মশা বাহিত রোগ, তাই সবার আগে মশা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। বাড়িতে মশা তাড়ানোর ধুপ জ্বালাতে হবে, রাতে শোওয়ার সময় অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে শুতে হবে। চেষ্টা করতে হবে ফুলহাতা জামা প্যান্ট পরার, যাতে সহজে মশা কামড়াতে না পারে। আপনার বাড়ির আশেপাশে যেখানে জঙ্গল রয়েছে বা যেখানে আবর্জনা জমে রয়েছে, তা পরিষ্কার করতে হবে যাতে জল কোথাও জমে না থাকতে পারে।
(আরও পড়ুন: ধূমপান করলে ফুসফুসটা কেমন দেখতে হয়ে যায় জানেন? ভয়ে শিউড়ে উঠতে পারেন)
আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনী যদি জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়, তাহলে যৌন মিলন থেকে বিরত থাকুন। এটি এমন একটি ভাইরাস যা যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলেও ছড়িয়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন, চিকিৎসকের পরামর্শ মত চলার চেষ্টা করুন। সচেতন এবং সাবধান থাকলে জিকা ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যায় খুব সহজেই।