চিনা পণ্য বয়কটের প্রচারের জেরে লাফিয়ে বেড়ে গিয়েছে ওষুধ তৈরির উপাদানের দাম। গত চার দিনে এই দাম বেড়েছে ৩০%, জানিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের ওষুধ উৎপাদন সংস্থাগুলি।
১৫ জুল পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনা সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনা সদস্য শহিদ এবং ৭৬ জন জখম হওয়ার পরে ভারতে চিনা পণ্য বয়কটের দাবি জোরালো হয়। দেশের একাধিক প্রান্তে চিনের জাতীয় পতাকা ও প্রেসিডেন্ট শি জিংপিনের ছবি পোড়ানোর পাশাপাশি চিনা পণ্য ব্যবহার বন্ধ করার দাবি ওঠে। কিন্তু তার জেরে বিপাকে পড়েছে দেশের ওষুধ শিল্প।
উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার ও রুদ্রপুরে রাজ্য শিল্প উন্নয়ন নিগমের অধীনে একশোর বেশি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার লপ্রধান দফতর রয়েছে। সেখানে এক অগ্রণী ওষুধ উৎপাদক সংস্থার কর্ণধার জানিয়েছেন, ‘গালওয়ান উপত্যকার ঘটনার পরে চিনকে বয়কটের ডাক উঠেছে, যার জেরে চিন থেকে ওষুধের উপাদান সরবরাহকারী সংস্থাগুলি রাতারাতি ৩০% দাম চড়িয়েছে। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির দোহাই দিলেও তারা অনৈতিক উপায়ে মুনাফা লোটার উদ্দেশেই এই প্রচার করছে।’
তাঁর অভিযোগ, ভারতে ওষুধের উপাদান সরবরাহকারী প্রধান ১০-১২টি সংস্থা রয়েছে, যারা মূলত চিন থেকে পণ্য আমদানি করে। উপাদান সরবরাহের উপরে এই সংস্থাগুলির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। তাদের এড়িয়ে উপাদান সংগ্রহ অসম্ভব, দাবি ওই শিল্পপতির। কিন্তু এর জেরে সাধারণ মানুষকে বাড়তি দামে ওষুধ কিনতে হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। এমনকি মাল মজুত রেখে কালোবাজারি করার প্রবণতাও দেখা দিচ্ছে সরবরাহকারীদের মধ্যে, দাবি ওষুধ উৎপাদকদের।
জানা গিয়েছে, ওষুধ তৈরির কাঁচামালের ৮০% চিন থেকে আমদানি করা হয়। ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে তা সংগ্রহ করতে গেলে দ্বিগুন দাম গুনতে হয় বলেই এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
হরিদ্বারের এক ওষুধ উৎপাদক সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন যে, চিন থেকেই ভারতে তৈরি সমস্ত ওষুধের উপাদান জোগাড় করা হয়। এমনকি সাধারণ প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ তৈরি করতে গেলেও চিনের উপাদানের উপরে নির্ভর করা ছাড়া উপায় নেই, দাবি ব্যবসায়ীদের।