রিচা বাঙ্কা
সুশান্ত সিং রাজপুত মামলায় খবরের সম্প্রচার নিয়ে একাধিক চ্যানেল ও অ্যাঙ্করের জবাব তলব করল দিল্লি হাইকোর্ট। বলিউডের ৩৪ টি প্রযোজক সংস্থার তরফে দায়ের করা সেই মামলায় রিপাবলিক টিভি, টাইমস নাও, অর্ণব গোস্বামী, নভিকা কুমার-সহ আর কয়েকজনকে জবাব দিতে হবে।
একইসঙ্গে বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে নিজেদের চ্যানেল বা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে যাতে কোনও মানহানিকর বিষয়বস্তু দেখানো না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য চ্যানেল এবং অ্যাঙ্করদের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজীব শাকধে। যে বাদীপক্ষের তালিকায় আছে শাহরুখ খান, আমির খান, সলমন খান, ফারহান আখতার, অজয় দেবগন, রোহিত শেট্টি, অনিল কাপুর, করণ জোহর, বিনোদ চোপড়া, আশুতোষ গোয়ারিকর, ফারহান আখতার, অক্ষয় কুমারদের প্রযোজনা সংস্থা। বিচারপতি শাকধে বলেন, ‘এরইমধ্যে বিবাদীপক্ষের (চ্যানেল) আইনজীবী আমায় আশ্বস্ত করেছেন যে তারা অনুষ্ঠান বিধি এবং কেবল টিভি রেগুলেশন আইনের অধীনের নিয়মগুলি মেনে চলবে।’
শুনানির সময় হাইকোর্ট জানায়, নিরপেক্ষতার সঙ্গে অবাধ ও সঠিকভাবে সংবাদ করতে হবে। পুরনো দিনের কথা স্মরণ করে বিচারপতি জানান, বর্তমানে যে ধরনের বিষয়বস্তু দেখানো হয়, তার থেকে দূরদর্শনের বিষয়বস্তু ঢের ভালো ছিল। বিষয়বস্তু কিছুটা ‘লঘু’ করার প্রয়োজন আছে বলে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘মনে হচ্ছে, সংবাদ চ্যানেলগুলি অনুষ্ঠান বিধি মানছে না।’
বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা আগেভাগেই বিষয়গুলির বিচার করে নিচ্ছেন। এটা নিয়ে কিছু একটা করার আছে। এটা প্রত্যেকের জন্য হৃদয়বিদারক এবং হতাশাজনক। সাধাণভাবে যতক্ষণ না চার্জশিট দাখিল হচ্ছে, ততক্ষণ আমরা সংশ্লিষ্ট মানুষের নামও করি না এবং তাঁকে বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করি। কিন্তু এখন চার্জশিট দাখিলের আগেই তাঁদের নাম এবং তাঁদের প্রতিটি তথ্য দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
বছর ১৫ আগের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, আমজনতা তো বটেই, প্রশিক্ষিত মানুষরাও সংবাদের মাধ্যমে প্রভাবিত হতে পারে। বিচারপতি বলেন, ‘প্রশিক্ষিত মানুষরাও এই বিষয়গুলি দ্বারা প্রভাবিত হন। যাঁরা নিয়মিত এই বিষয়গুলির নিয়ে নাড়াচাড়া করেন।’ ডায়ানার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে হাইকোর্টের বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা চতুর্থ স্তম্ভ। মানুষ সেটির উপর ভীত। কেউ চান না যে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন জনসমক্ষে টেনে আনা হোক। গোপনীয়তা নষ্ট হয়।’
বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে যে ধরনের শব্দ ব্যবহার করা হয়, বিতর্কে অংশগ্রহণকারীও যেভাবে কুরুচিকর শব্দ ব্যবহার করেন, তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিচারপতি। পরে হাইকোর্ট জানায়, আগামী ১৪ ডিসেম্বর আবারও মামলার শুনানি হবে।