দক্ষিণ এশিয়ার বুকে চিন ও পাকিস্তানের বন্ধুত্ব নতুন করে ভাবাচ্ছে দিল্লিকে। কারণ এই দুই 'বন্ধু' দেশ যেমন একদিকে ভারতের প্রতিবেশী, তেমন এদের হিংস্রতার রূপও বহুবার দেখেছে ভারতীয় সীমান্ত। সদ্য সেনা দিবসে সেনা প্রধান নরভানে সীমান্তে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সীমান্তে একপাক্ষিক স্থিতাবস্থা ভাঙতে কাউকে দেবে না ভারতীয় সেনা। নিজের বক্তব্যে তিনি চিন ও পাকিস্তানের কথাও তুলে ধরেন। তবে তার আগে থেকেই চিন ও পাকিস্তানের মধ্যে যে প্রকল্প নিয়ে আলোচনা চলেছে তাতে খানিকটা উদ্বেগে ভারত। এমনই মত বহু বিশ্লেষকের।
পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের মুজাফ্ফরাবাদ থেকে চিনের সিনকিংয়ারে ইয়ারকান্দ পর্যন্ত একটি সড়ক স্থাপনের আলোচনা চলছে বলে খবর। এই সড়ক যদি তৈরি হয়ে যায়, তাহলে বিভিন্ন কূটনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে ভারতের মাথাব্যথার কারণ হতে পারে এই পথ। কারণ অবৈধভাবে কাশ্মীরের অংশ দখল করা পাকিস্তান মুজাফ্ফরাবাদে যদি রাস্তা নির্মাণ করতে শুরু করে তাহলে তা কূটনৈতিক দিক থেকে ভারতের পক্ষে খারাপ খবর। আবার যে উপত্যকার উপর দিয়ে এই রাস্তা নির্মাণ হবে, সেই সাক্সগাম উপত্যকা ১৯৬৩ সালে অবৈধভাবে পাকিস্তান চিনকে দিয়ে দেয়। আর এই সড়ক তৈরি হলে, সিয়াচেন সীমান্তে ভারতের সেনার কাছে বড়সড় চ্যালেঞ্জ উপস্থিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
যে এলাকা দিয়ে পাকিস্তান ও চিনের মধ্যের এই সড়ক যাবে, সখানে সিয়াচেন ছাড়াও রয়েছে রিমো, তেহরাম হিমবাহ। এই এলাকার সংলগ্ন বাকি হিমবাহের জায়গা দখলে রেখেছে চিনের লালফৌজ। উত্তরে চিনের সাক্সগাম উপত্যাক, পশ্চিমে পাক অধিকৃত কাশ্মীর। একদিকে যখন চিনের লালফৌজ ক্রমাগত ভারতীয় সেনাকে রোখার চেষ্টা করেছে, এবং লাদাখে তাদের আগ্রাসনের ছবি বারবার দেখা গিয়েছে, তখন এই নয়া রাস্তার প্রকল্প ভারতের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে। এই সড়ক যোগাযোগে যে পাকিস্তান ও চিনের সেনা কার্যকলাপ বাড়বে তা বলাই বহুল্য। অন্যদিকে, তা ভারতের জন্যও কাঁটা হয়ে উঠছে , কারণ এই রাস্তার ফলে ভারত সীমান্তের দুই দিক কার্যত চ্যালেঞ্জিং হয়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সিয়াচেন সীমান্তে ভারতীয় সেনাকে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারে এই সড়ক। ফলে এমন অক পরিস্থিতিতে সিয়াচেন সীমান্তে পোক্ত প্রহরা ভারতের কূটনৈতিক দিক থেকে পাখির চোখ হয়ে উঠছে।