বিধানসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, তত বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হচ্ছে। সেই রেশ ধরে তেলিনিপাড়ার গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে লোকসভায় বিতর্কিত মন্তব্য করলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। মন্তব্য করলেন, পুরনো দিনের কাশ্মীরে পরিণত হচ্ছে বাংলা।
বাদল অধিবেশনের তৃতীয় দিন সংসদের নিম্নকক্ষে তেলিনিপাড়ার ঘটনা নিয়ে বক্তব্য পেশ করেন লকেট। সেই সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোষামোদের রাজনীতির অভিযোগ তোলেন হুগলির সাংসদ। বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে বলছি, পশ্চিমবঙ্গ বিপদের মধ্যে আছে। বাংলা পুরনো কাশ্মীরে পরিণত হচ্ছে।’
লকেট অভিযোগ করেন, লকডাউন চলাকালীন করোনাভাইরাস পরীক্ষা করতে অস্বীকৃত হয়েছিলেন একটি সম্প্রদায়ের মানুষ। তা নিয়েই মতবিরোধ হয়েছিল এবং সংঘর্ষ বেঁধে গিয়েছিল। বোমা নিয়ে বহিরাগতরা এলাকায় ঢুকেছিল। বাড়ি লুটপাট করা হয়েছিল। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল দোকান। মহিলাদেরও শ্লীলতাহানি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন লকেট।
গত মে মাসে ভদ্রেশ্বর থানা এলাকার তেলিনিপাড়ায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল দুটি গোষ্ঠী। লকডাউনের মধ্যেই ইট-পাটকেল ছোড়া হয়েছিল। চলেছিল বোমাবাজি। এলাকায় জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারা। ব্রডব্যান্ড-সহ ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার জন্য বিজেপি নেতাদের একাংশকে দায়ী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কড়া ভাষায় তিনি জানিয়েছিলেন, পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাতীয় বিপর্যয় আইন মোকাবিলা ভঙ্ করে যারা সংঘর্ষে জড়িয়েছে, তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। কে সম্প্রদায়ের মানুষ, তা মোটেও দেখা হবে না।
যদিও লকেটের অভিযোগ, শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের তোষামোদের রাজনীতির জন্যই সেই সংঘর্ষ হচ্ছে। আর তা শুধু তেলিনিপাড়া নয়, ২০১৬ সালে দুর্গাপুজোর বিসর্জন, পরের বছর রামনবমীর সময়ও একই ঘটনা ঘটেছিল। লকেটের কথায়, ‘তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা তাতে জড়িত থাকেন। আমি যদি নাম বলি, তাহলে ওই পার্টি আমায় বলবে, আমি সাম্প্রদায়িক।’
পরে মুখ্যমন্ত্রী ও যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে লকেট বলেন, ‘গরু দুধ দেবে পিসি-ভাইপোকে। তার জন্য লাথি মারবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে।’