প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে উদ্বোধনের পরে তিন দিনে তিনটি দুর্ঘটনা ঘটল ১০,০০০ ফিট উচ্চতার অটল টানেলে। দুর্ঘটনার জন্য পর্যটকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো ও গাফিলতিকেই দায়ী করলেন বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন-এর (BRO) প্রধান স্থপতি ব্রিগেডিয়ার কে পি পুরুষোত্তম।
ব্রিগেডিয়ারের দাবি, বেশ কিছু পর্যটক টানেলের ভিতরে রীতিমতো গোলমাল পাকাচ্ছেন। কেউ সেলফি তুলছেন, তো কেউ আবার নিরাপত্তাবিধি ও ট্র্যাফিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মারাত্মক গতিতে গাড়ি ছোটাচ্ছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘পর্যটকদের অভব্য আচরণ সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়েছে।’
পুরুষোত্তম জানিয়েছেন, টানেলের ভিতরে নিরাপত্তা ও ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘনের বিষয়টি নিয়ে তিনি কুলু এবং লাহুল-স্পিতির পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনায় নতুন নিয়ম-নীতি নির্ধারণের জন্যও তিনি পুলিশ প্রধানকে অনুরোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন BRO-এর প্রধান স্থপতি।
গত রবিবার অটল টানেলের ভিতরে অতি দ্রুতগতির কারণে তিনটি যানের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। তবে পারস্পরিক বোঝাপড়র ফলে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
অন্য দিকে, হিমাচল প্রদেশের ডিজিপি সঞ্জয় কুন্ডু জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থায় অটল টানেলের ভিতরে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কুলু ও লাহুল-স্পিতি জেলা পুলিশে একটি রিজার্ভ ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, সুড়ঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণাংশে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে যার প্রতিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এসআই পদমর্যাদার একজন আধিকারিককে।
উল্লেখ্য, ৯.০২ কিমি দীর্ঘ অটল টানেলকে প্রশাসনিক সুবিধার জন্য ৪.৫ দৈর্ঘ্যের দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সুড়ঙ্গের দক্ষিণাংশ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব ন্যস্ত হয়েছে কুলু পুলিশের উপরে এবং উত্তরাংশের দায়িত্ব বর্তেছে লাহুল-স্পিতি পুলিশের উপরে।
কুন্ডু জানিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য সুড়ঙ্গে প্রবেশের আগে সোলাং ও তেলিংয়ে গাড়ি পরীক্ষা করার জন্য চেকপোস্ট তৈরি করা হয়েছে। টানেলের ভিতরে কোনও বিস্ফোরক বা দাহ্য পদার্থ প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
এ ছাড়া সুড়ঙ্গে চলাচলের জন্য নতুন নিয়ম-নীতি নির্ধারণের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এই বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
শুধু তাই নয়, এই বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিতে বানিহালের জওহর টানেল ও চেনানি-নাশরির শ্যামা প্রসাদ মুখোপাধ্যায় টানেলে উত্তরাখণ্ড পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুঁটিয়ে দেখতে উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে।