'আমার শেষ ইচ্ছা পূরণ করবেন?' প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ করে ১৯ পাতার চিঠি লিখে আত্মহত্যা করল ১৫ বছরের ছাত্রী আঁচল গোস্বামী। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের সম্বল জেলার ববরালার।
উনিশ পাতার সেই চিঠিতে নিজের পরিবার নয়, বরং দেশ ও সমাজের পরিস্থিতি নিয়ে নিজের মত দিয়েছে আঁচল। চিঠিতে আঁচল জানিয়েছে, চিন ভারতে প্লাস্টিকের তৈরি খেলনা সামগ্রী পাঠায়। কিন্তু বেশিদিন না চলায় সেগুলি ফেলে দেওয়া হয়। ফলে মাটি দূষিত হয়ে পড়ে। যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলার প্রবণতা রুখতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ছোটো নদীর দেড় কিলোমিটার এবং বড় নদীর এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বৃক্ষরোপণেরও প্রস্তাব দিয়েছে আঁচল।
শব্দদূষণের বিষয়েও মোদীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ওই ছাত্রী। তার আর্জি, দীপাবলির সময় শব্দবাজির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে শুধু ফুলঝুরি পোড়ানোর অনুমতি দেওয়া হোক। বৈদ্যুতিক আলোর পরিবর্তে মাটির প্রদীপ ব্যবহারের পক্ষে সওয়াল করেছে। একইভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের উপরও জোর দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে আঁচল। তার মতে, ভারতের জনসংখ্যা ইতিমধ্যে ১৩৫ কোটি হয়ে গিয়েছে। এখনও জনসংখ্যা লাগাতার বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে জন্মসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কঠোর আইন কার্যকর করার প্রয়োজনীয় বলে জানিয়েছে সে।
চিঠিতে মোদীর ভূয়সী প্রশংসাও করেছে আঁচল। সে লিখেছে, 'দেশে অনেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। কিন্তু কেউ মোদীর মতো নন। আপনার প্রতি আমার হৃদয়ে প্রচুর সম্মান আছে। আমি যদি আমার বয়স আপনাকে দিতে পারতাম! আপনার রন্ধ্রে রন্ধ্রে সংস্কার আছে। বছরের পর বছর ধরে দেশ অন্ধকারে ডুবেছিল। আপনি সূর্য হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীজি আমি আপনার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ করতে চাইতাম। কিন্তু তা সম্ভব নয়, কারণ আপনি নিজেকেই সময় দিতে পারেন না। সর্বদা দেশের সেবায় নিয়োজিত থাকেন।'
তবে আত্মহত্যার জন্য কাউকে দায়ী করেনি আঁচল। সে বলেছে, ‘আমি স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করছি। সেজন্য কেউ দায়ী নয় - ঘরের বা বাইরের কেউ নয়। মা, তুমি আমায় ক্ষমা করে দিও। আমি জানি না, আমার কী হয়েছে মা। মনে হয়, কেউ আমায় জীবিত দেখতে চায় না। আমি বাধ্য, আমার মাথাটা কী করে দিয়েছে, আমার জীবন নরক হয়ে উঠেছে।’
তবে মোদীর উদ্দেশে আঁচল জানিয়েছে, ভারতকে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠার জন্য সে প্রার্থনা করেছে। একইসঙ্গে তার আকুতি, ‘প্রধানমন্ত্রীজি, আপনি কি আমার ইচ্ছাগুলি পূর্ণ করতে পারবেন?’