রাজনীতির অলিন্দে সারাদিন একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খেল, সত্যি কি দল ছাড়তে চলেছেন সচিন পাইলট? দিনের শেষে সেই জল্পনা কমল তো নাই, উলটে তাতে আরও ঘি ঢাললেন খোদ রাজস্থানের উপ-মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দিলেন, সোমবার সকালে কংগ্রেস বিধায়কদের বৈঠকে থাকছেন না তিনি। একইসঙ্গে জানালেন, তাঁর কাছে কমপক্ষে ৩০ জন বিধায়কের সমর্থন আছে।
রবিবার সন্ধ্যায় একটি হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। সে গ্রুপটি পাইলটের নিজের কার্যালয়ের তরফে চালানো হয়। তাতে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘আগামিকাল (সোমবার) কংগ্রেস বিধায়কদের যে বৈঠকে আছে, তাতে যোগ দেবেন না রাজস্থানের উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলট।’
তবে সেখানেই শেষ হয়নি বোমা ফাটানো। কোনওরকম রাখঢাক না করে দলত্যাগের স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে বলা হয়, ‘পাইলট জানিয়েছেন, ৩০ জন কংগ্রেস বিধায়ক এবং কয়েকজন নির্দল বিধায়ক তাঁকে সমর্থন করায় অশোক গেহলট সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে।’
২০০ আসন বিশিষ্ট রাজস্থান বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার হল ১০১। আপাতত কংগ্রেসের হাতে রয়েছে ১০৭ জন বিধায়ক। পাশাপাশি ১২ জন নির্দল এবং পাঁচ জন অন্য দলের বিধায়কও কংগ্রেস সরকারে সমর্থন জুগিয়েছেন। বিজেপির দখলে আছে ৭২ জন। তারইমধ্যে পাইলট জানিয়েছেন, তাঁর হাতে ৩০ জন বিধায়ক রয়েছেন। নির্দল বিধায়কদের সমর্থন না ধরলেও সেক্ষেত্রে কংগ্রেস সরকারের বিধায়ক সংখ্যা কমে দাঁড়াবে ৯৬। অর্থাৎ সংখ্য়াগরিষ্ঠতা হারাবে কংগ্রেস। অন্যদিকে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তাঁর অনুগামীদের নিয়ে বিজেপি যোগ দিলে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১০২। সঙ্গে যোগ হবেন পাইলটের পক্ষে থাকা নির্দল বিধায়করা। তখন মরু রাজ্যে আবারও পদ্মফুল ফোটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা হবে। অনেকের অবশ্য বক্তব্য, পাইলট বিজেপিতে যোগ না দিয়ে নিজের দল গড়বেন। সেক্ষেত্রে বিজেপিকে সমর্থন জোগাবেন। তখনও কংগ্রেস সরকার পতনের সমীকরণে কোনও হেরফের হবে না।
সরকার রক্ষার সংকটের মধ্যে অবশ্য বাইরে থেকে চূড়ান্ত আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছেন গেহলটের অনুগামীরা। রবিবার রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে কংগ্রেস বিধায়কদের বৈঠকের পর রাজেন্দ্র গুড্ডা বলেন, ‘গেহলটজির সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। আমরাও চেষ্টা চালাচ্ছি এবং কয়েকজন বিজেপি বিধায়ক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। আমরা যত না বিধায়ক হারাব, তার থেকে বেশি বিধায়ক বিজেপি থেকে আনব।’
যদিও সেটা সত্যি নাকি নিজেরা কোণঠাসা হয়ে বিজেপির উপর শুধু চাপ রাখার কৌশল, তা সময়ই বলবে। তবে রবিবার রাতে যে কংগ্রেস নেতাদের ঘুম উড়ছে, তা অনুধাবনের জন্য এক মুহূর্তও সময় লাগবে না।