করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও জলবায়ু পরিবর্তনের উপর জোর দিতে হবে। সেজন্য বিশ্বের সব দেশকে জোটবদ্ধভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করতে হবে। জি-২০ শীর্ষ বৈঠকে এমনটাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে মোদী জানান, করোনাভাইরাসের গ্রাস থেকে দেশবাসীর জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনও রুখতে হবে। আর সেজন্য বিশ্বের সব দেশকে একজোট হতে হবে। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার উপর নজর রাখাও একইরকমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। নিঃশব্দে নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ, বিস্তৃত এবং সামগ্রিকভাবে লড়াই করতে হবে।’
মোদী জানান, বিশ্বের পরিবেশের স্বার্থে দেশে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তার ফলে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল, তাও ছাপিয়ে গিয়েছে ভারত। তাঁর কথায়, ‘পরিবেশের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে থাকার ক্ষেত্রে আমাদের ঐতিহ্য এবং আমার সরকারের প্রতিজ্ঞার ফলে ভারতে কার্বন নিঃসরণ কম হচ্ছে এবং জলবায়ুর পক্ষে সহায়ক হবে, এমন উন্নয়নমূলক ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ভারত শুধু প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা মেনে চলছে, এমনটা নয়। বরং সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েও যাচ্ছে।’
কীভাবে কার্বন নিঃসরণ কমেছে, তাও ব্যাখ্যা করেন মোদী। তিনি জানান, এলইডি আলোর ব্যাপক জনপ্রিয়তার ফলে প্রতি বছর ৩৮ মিলিয়ন টন কার্বন-ডিঅক্সাইড কম নিঃসৃত হচ্ছে। দেশের ৮০ মিলিয়ন গৃহস্থে রান্নার গ্যাস প্রদান করা হয়েছে। ‘সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক’ ব্যবহার বন্ধেরও প্রয়াস চলছে বলে জানান মোদী। একইসঙ্গে তিনি আশ্বাস দেন, ২০২২ সালের মধ্যে ১৭৫ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে, তা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পেরিয়ে যাবে ভারত।
শনিবারও জি-২০ শীর্ষ বৈঠকে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দিয়েছিলেন মোদী। সেখানে মূলত করোনাভাইরাস মহামারী থেকে ঘুরে দাঁড়াতে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশগুলিকে জোটবদ্ধভাবে কাজ করার উপর জোর দিয়েছিলেন। সেই বৈঠকে করোনা-পরবর্তী দুনিয়ায় একটি বিশ্বব্যাপী সূচকের চালুরও প্রস্তাব দেন মোদী। তাতে দক্ষতা, সমাজের সব শ্রেণির কাছে প্রযুক্তি পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা, শাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং বিশ্বস্ততার উপর জোর দেওয়া হবে। যা জি-২০-কে নয়া বিশ্বের ভিত্তিপ্রস্তর নির্মাণে সাহায্য করবে। পরে টুইটারে মোদী বলেন, ‘প্রতিভা তৈরির জন্য বহমুখী দক্ষতা এবং আবারও দক্ষ করার ফলে আমাদের কর্মীদের মর্যাদা এবং সহনশীলতা বাড়বে। মনুষ্যত্বের উপর কী কী সুবিধা আছে, তার ভিত্তিতে নয়া প্রযুক্তির মূল্য বিচার করতে হবে।’