বিদেশ থেকে আমদানি নয়, বরং ঘরোয়াভাবেই প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির লক্ষ্য নিচ্ছে কেন্দ্র। তারই প্রথম ধাপ হিসেবে ১০১ টি সরঞ্জাম আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ইতিমধ্যেই সেই তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়সীমার পর ধাপে ধাপে সেই সরঞ্জামগুলি আর বিদেশ থেকে আনা হবে না।
রবিবার সকাল ন'টা নাগাদ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কার্যালয়ের তরফে জানানো হয়, এক ঘণ্টা পর 'গুরুত্বপূর্ণ' সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন রাজনাথ। তখন থেকেই জল্পনা চলছিল, দেশীয় উৎপাদনে জোর দেওয়ার জন্য কয়েকটি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হবে।
জল্পনামতোই একাধিক টুইটবার্তায় রাজনাথ জানান, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে 'আত্মনির্ভর ভারত' অভিযান শুরু হয়েছে, প্রতিরক্ষা খাতেও একইভাবে 'আত্মনির্ভর' হওয়ার পথে হাঁটছে ভারত। তিনি বলেন, পাঁচটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে আত্মনির্ভর ভারতের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেগুলি হল - অর্থনীতি, পরিকাঠামো, পদ্ধতি, জনসংখ্যা এবং চাহিদা। পাশাপাশি আত্মনির্ভর ভারতের জন্য একটি বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করেছেন। সেটি হল - আত্মনির্ভর ভারত। সেই আহ্বান থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে ১০১ টি সরঞ্জামের তালিকা তৈরি করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। যে সরঞ্জামগুলিতে নির্দিষ্ট সময়সীমার পরে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হচ্ছে। প্রতিরক্ষা খাতে আত্মনির্ভরতার পক্ষে এটা বড়সড় পদক্ষেপ।'
রাজনাথ জানান, প্রতিরক্ষা খাতে দেশীয় উৎপাদনকে বল দিয়ে আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তৈরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তিনি বলেন, 'এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের সামনে নয়া সুযোগ খুলে গেল। সশস্ত্র বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য যারা নিজেদের নকশা এবং উৎপাদন দক্ষতা বা ডিআরডিওয়ের (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন) প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিষিদ্ধ তালিকায় থাকা সরঞ্জাম তৈরি করতে পারবে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে যে ১০১টি সরঞ্জামে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে, তার মধ্যে আছে আর্টিলারি বন্দুক, ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী অস্ত্র, জাহাজে থাকা ক্ষেপণাস্ত্র, লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট (এলএসি), লাইট ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফট, ভূমিতে হামলা চালানোর দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, যোগাযোগের উপগ্রহ (কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট), বেসিক ট্রেনার এয়ারক্রাফট, মাল্টি-ব্যারেল রকেট লঞ্চার, অ্যাসল্ট রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, ছোটো আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকেল (ইউএভি)-সহ গোলাবারুদ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তালিকা অনুযায়ী, চলতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে ৬৯ টি সরঞ্জাম আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হচ্ছে। আগামী বছর ডিসেম্বরের সেই নিষিদ্ধ তালিকায় যুক্ত হবে আরও ১১ টি সরঞ্জাম। এভাবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রতি ডিসেম্বরে আরও কয়েকটি সরঞ্জামের আমদানিতে বিধিনিষেধ জারি করা হবে।