হিন্দু মেয়েকে পরিচয় গোপন রেখে ফুঁসলিয়ে বিয়ে করা ও তারপর তাঁকে ধর্মান্তরিত করা-এটারই পোশাকি নাম লাভ জিহাদ। মধ্যপ্রদেশ ইতিমধ্যেই বিল এনেছে লাভ জিহাদে পাঁচ বছরের জেলের। একই রকম বিল আনতে পারে হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্য। এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন প্রবীন কংগ্রেস নেতা তথা রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্যই বিজেপি এই শব্দটি ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। পালটা তোপ দেগেছে গেরুয়া দলও। তাদের দাবি ভারতে বিয়ে শুধু দুই ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এতে সমাজ ও ধর্মের সম্মতিও প্রয়োজন।
অশোক গেহলট এদিন টুইটারে বলেন যে কে কার সঙ্গে বিয়ে করবে এটা ব্যক্তিগত স্বাধীনতার বিষয়, এই নিয়ে আইন আনা অসাংবিধানিক। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র শেখাওয়াত গেহলটকে পালটা প্রশ্ন করেন যে ব্যক্তিগত অধিকারের ইস্যু হলে বিয়ের পর মেয়েদের নাম ও ধর্ম বদলাতে হচ্ছে কেন। তবে গেহলট বলেন যে এই সকল আইন আদালতে ধোপে টিকবে না।
গেহলট বলেন যে প্রেমে কোনও জিহাদের জায়গা নেই। ওরা এমন একটা দেশে পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে যেখানে দুজন প্রাপ্তবয়স্ককে রাষ্ট্রের শক্তির ওপর নির্ভর করতে হবে বিয়ের জন্য। গেহলট বলেন যে বিয়ে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত ও সেটিতে বিধিনিষেধ এনে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে মনে হচ্ছে এটা সমাজে সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা ও অশান্তি সৃষ্টির জন্য করা। রাজস্থানের সাংসদ কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র শেখাওয়াত বলেন যে লাভ জিহাদ আসলে ফাঁদ হাজার হাজার মহিলাদের এটা বিশ্বাস করানোর যে বিয়ে তাদের ব্যক্তিগত বিষয়, যদিও বাস্তবে তা হয়না। কেন মহিলাদের নাম বদল করতে হয় ও ধর্মান্তকরণ করতে হয় সেই প্রশ্নও করেন তিনি। ধর্ম পালন কি ব্যক্তিগত অধিকার নয়, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। ব্যক্তিগত স্বাধীনতার আড়ালে কি এটা কংগ্রেসের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, সেই প্রশ্নও উঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
বিজেপির রাজস্থান প্রধান সতীশ পুনিয়া যদিও অতটা রাখঢাক করে বলেননি। সতীশ বলেন যে কিভাবে অসহায় মেয়েদের ইসলামের সন্ত্রাসের এজেন্ডা লাভ জিহাদের জেরে হেনস্থা হতে হয়, সেটা সবাই জানে। গেহলট ভোট ব্যাঙ্ক পলিটিকস করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিয়ে শুধু দুইজনের বিষয় নয়, এতে সমাজ ও ধর্মের সম্মতিও লাগে। এটা শুধু দুইজনের ব্যক্তিগত অধিকারের প্রশ্ন নয় বলেই তিনি দাবি করেন।