লাগাতার ভারী বর্ষণে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ত্রিপুরায়। প্লাবিত হয়েছে একাধিক এলাকা। এই অবস্থায় ত্রিপুরায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও, ঘরছাড়া হয়েছেন ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় কেন্দ্রের কাছে সাহায্য চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোনে ত্রিপুরার পরিস্থিতি নিয়ে অবগত করার পাশাপাশি মোকাবেলায় আরও বেশি সংখ্যায় এনডিআরএফ কর্মীদের মোতায়েন করার আবেদন জানিয়েছেন মানিক সাহা।
আরও পড়ুন: '…১০ গুণ বেশি ক্ষতি হত', বন্যা নিয়ে ভারতের ওপর বাংলাদেশের রাগ কি ভিত্তিহীন?
অবিরাম বৃষ্টির ফলে ত্রিপুরার একাধিক জেলা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ ত্রিপুরা, গোমতী এবং খোয়াই জেলা। ওই তিনটি জেলাতেই ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে এক কিশোরী। সবমিলিয়ে ত্রিপুরার চারটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতিতে ১ হাজার টিরও বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উত্তর ত্রিপুরার ধর্মনগর, কৈলাশহর, উনাকোটি জেলার কুমারঘাট, ধলাই জেলার কমলপুর, লংট্রাইভ্যালি এবং গন্ডাচেরা, সেপাহিজলার বিশালগড় ও সোনামুড়া, খোয়াই জেলার তেলিয়ামুরা ও খোয়াই, উদয়পুর, কারবুক ও অমরপুর, গোমতি জেলার সবুরু, সাবরুম। দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার সান্তিরবাজার এবং আগরতলা শহর সহ পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার সদর ও জিরানিয়া মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেখানে বিরামহীন উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে উদ্ধারকারী দল। রাজ্যের নদীগুলিও বিপদসীমার উপরে বইছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় ত্রিপুরায় অবিরাম বর্ষণে ভূমিধস ও ডুবে একই পরিবারের তিন সদস্যসহ অন্তত ১০ জন মারা গিয়েছেন এবং দুজন আহত হয়েছেন। বৃষ্টির ফলে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে ত্রিপুরায় ১০ টি লোকাল ট্রেন বাতিল করেছে। ভারী বৃষ্টির কারণে গোমতি জেলায় রেল লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে এই ট্রেনগুলি বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, রাজ্য প্রশাসনের অনুরোধের পর অসম রাইফেলসের চারটি বাহিনী বিভিন্ন জেলায় মোতায়েন করা হয়। তারা বন্যায় কারণে আটকে পড়া নাগরিকদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। অন্যদিকে, ভারী বৃষ্টির কারণে ত্রিপুরায় আজও বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল। উল্লেখ্য, গোমতি জেলার গোমতী জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জলাধার ডম্বুর বাঁধ থেকে জল ছাড়ার অভিযোগ উঠেছিল। তবে ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ সেই দাবি অস্বীকার করেন। তিনি জানান, এই ধরনের কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। জলাধারের ধারণ ক্ষমতা অতিক্রম করার পরে বাঁধ থেকে অতিরিক্ত জল উপচে পড়েছিল।