আজ সেনা দিবস। প্রতি বছর ১৫ জানুয়ারি দেশজুড়ে সেনা দিবস পালন করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ১৯৪৯ সালে এ দিনই সেনাবাহিনীর দায়িত্ব প্রথম গ্রহণ করেছিলেন ভারতীয় সেনাধ্যক্ষ তথা কম্যান্ডার-ইন-চিফ জেনারেল কে এম কারিয়াপ্পা।
স্বাধীনতা অর্জনের পরে ভারতীয় সেনার প্রথছম দুই প্রধান ছিলেন ব্রিটিশ। শেষ বির্টিশ সেনাপ্রধান স্যর ফ্রান্সিস রবার্ট রয় বুচারের থেকে ১৯৪৯ সালের ১৫ জানুয়ারি ভারতীয় সেনাবাহিনীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন জেনারেল কারিয়াপ্পা। সেই সময় তাঁর বয়স মাত্র ৪৯ বছর। চার বছর সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পরে ১৯৫৩ সালের ১৬ জানুয়ারি তিনি অবসরগ্রহণ করেন।
জেনে নিন সেনা দিবস সম্পর্কে জরুরি তথ্য:
১) সেনা দিবসের অন্যতম প্রধান উদযাপন দিল্লি ক্যান্টনমেন্টের প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত দ্য আর্মি ডে প্যারেড। হেড কোয়ার্টার, দিল্লি এরিয়ার জেনারেল অফিসার কম্যান্ডিং-এর নেতৃত্বাধীন প্যারেড পর্যবেক্ষণ করার পরে স্যালুট গ্রহণ করেন সেনাপ্রধান। তাঁর সঙ্গী ভারতীয় বাহিনীর অন্য দুই বিভাগীয় প্রধানও প্রতি বছর এই প্যারেডে উপস্থিত থেকে স্যালুট গ্রহণ করেন। প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজেও এই প্যারেড এক বিশেষ স্থান পায়।
২) ভারতীয় বাহিনীর তিন বিভাগীয় প্রধান ছাড়া এ বছর সেনা দিবসের এই বিশেষ প্যারেডে উপস্থিত থাকবেন এবং স্যালুট গ্রহণ করবেন ভারতের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত। গত ৩১ ডিসেম্বর তিনি সেনাপ্রধানের পদ থেকে অবসগ্রহণের পরে সিডিএস পদে দায়িত্বগ্রহণ করেন।
৩) দিল্লি ক্যান্টনমেন্টের এই প্যারেড গ্রাউন্ডটি আকারে রাজধানীর অন্যান্য মাঠের তুলনায় অন্যতম বৃহত্তম। মাঠটি সেনাবাহিনীর প্রথম ভারতীয় প্রধান জেনারেল কারিয়াপ্পার নামে নামাঙ্কিত হয়েছে। প্রতি বছর কারিয়াপ্পা প্যারেড গ্রাউন্ডে সেনার বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়ে থাকে।
৪) সেনা দিবসে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য সেনা জওয়ান ও পদাধিকারীদের সাহসিকতার পদক প্রদান করেন সেনাপ্রধান। এই অনুষ্ঠানে সাহসিকতার জন্য পুরষ্কৃত হয় সেনার বিভিন্ন বাহিনীও।
৫) এবারের সেনা দিবসে ১৫ জন সেনা জওয়ান সাহসিকতার পুরস্কার পাচ্ছেন এবং ১৮টি বাহিনী পাচ্ছে ইউনিট সাইটেশন।
৬) প্রতি বছর সেনা দিবসের এই প্যারেডে অংশগ্রহণ করেন পরমবীর চক্র (যুদ্ধকালীন এবং শান্তিকালীন সাহসিকতার জন্য সর্বোচ্চ সামরিক পুরস্কার) এবং অশোক চক্র অর্জনকারীরা।
৭) এই প্যারেডে প্রদর্শিত হয় সেনাবাহিনীর সংগ্রহে থাকা বিভিন্ন অত্যাধুনিক অস্ত্র সম্ভার ও জরুরি যান্ত্রিক সরঞ্জাম। এবারের প্যারেডে প্রদর্শিত হচ্ছে পদাতিক বাহিনীর যুদ্ধযান বিএমপি-২কে, কে৯ বজ্র-টি আর্টিলারি গান, স্থানীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ধনুষ টোওড গানস, টি-৯০ মেন ব্যাটল ট্যাঙ্ক এবং শর্ট স্প্যান ব্রিজিং সিস্টেম।
৮) প্যারেডে থাকছে ১৮টি পৃথক বাহিনী এবং প্রদর্শিত হবে শত্রুভূমিতে সেনার গতিবিধির নমুনা সংস্করণ।
৯) আর্মি ডে প্যারেডের ইতিহাসে এবারই প্রথম প্যারেড অ্যাডজুট্যান্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করছেন এক মহিলা সেনা আধিকারিক। দুই বছর আগে কর্পস অফ সিগন্যালস বাহিনীতে নিয়োগ করা হয় ক্যাপ্টেন তানিয়া শেরগিলকে। প্যারেড পরিচালনা এবং নির্দেশনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব এ দিন পালন করছেন ক্যাপ্টেন শেরগিল।
১০) সেবনা দিবসের উত্সবে বিশেষ আকর্ষণ হল দিল্লির রাজাজি মার্গে সেনাপ্রধানের সরকারি বাসভবনে তাঁর দেওয়া বিশেষ রিসেপশন। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যরা, বাহিনীর তিন বিভাগের শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকরা, প্রাক্তন সেনাপ্রধানরা এবং দিল্লিতে বহাল বিদেশের ডিফেন্স অ্যাটাশেরা।