এবার ভারতীয় মৎস্যজীবীদের আটক করল ব্রিটিশ নৌবাহিনী। আন্তর্জাতিক জলসীমা লঙ্ঘন করে ব্রিটিশদের অধিকৃত সীমানায় অনুপ্রবেশের অপরাধে ১০ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে আটক করেছে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান ওশেন টেরিটরি (বিআইওটি) কর্তৃপক্ষ। গত ৯ জানুয়ারি কন্যাকুমারী থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার সময় ভারতীয় মৎস্যজীবীদের আটক করার পাশা পাশি তাদের ট্রলারও আটক করেছে ব্রিটিশ নৌসেনা।
আরও পড়ুন: জলসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ, ১৬ ভারতীয় মৎসজীবীকে গ্রেফতার করল বাংলাদেশ
জানা যায়, গত ডিসেম্বরে তামিলনাড়ুর থেঙ্গাপট্টিনাম ফিশিং বন্দর থেকে বেশ কয়েকটি ট্রলারে করে মাছ ধরতে বেরিয়েছিলেন ২৯ জন মৎসজীবী। সেই সময় ১০ জনকে আটক করা হয। তামিল ম্যানিলা কংগ্রেস নেতা জি কে ভাসান এর জন্য কেন্দ্রের তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি ভারত মহাসাগরে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার সুরক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। ঘটনার নিন্দা করে ভাসান বলেন, এই ঘটনায় তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবীরা হতবাক। শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী ঘন ঘন ভারতীয় মৎস্যজীবীদের গ্রেফতার করছে। এই কারণে তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবীরা জীবিকা হারাতে বসেছে। এবার ভারত মহাসাগরে মাছ ধরার সময় ব্রিটিশ নৌবাহিনী তামিলনাড়ুর মৎস্যজীবীদের আটক করছে। এটা ঠিক নয়।
জানা গিয়েছে, এই ১০ মৎসজীবীকে দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপের কাছে ব্রিটিশ নৌবাহিনী গ্রেফতার করেছে। তামিলনাড়ুর মৎস্য বিভাগের আধিকারিক আইএএনএসকে জানিয়েছেন, ব্রিটিশ নৌবাহিনী সোমবার ভোরে টুনা মাছ ধরার সময় মৎস্যজীবীদের আটক করে।আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বাউন্ডারি লাইন (আইএমবিএল) বা আন্তর্জাতিক জলসীমা লঙ্ঘন করার অভিযোগে মৎস্যজীবীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
মৎস্য অধি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৎস্যজীবীদের ব্যবহার করা একই নৌকা এর আগেও আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রমের অভিযোগে দুইবার আটক করা হয়েছিল। তামিলনাড়ুর মৎস্য দফতর ইতিমধ্যেই ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রককে এই ঘটনার কথা জানিয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারি তামিলনাড়ুর রামেশ্বরম এবং থাঙ্গাচিমাদমের ৮ মৎসজীবীকে আটক করেছিল শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী।
জানা গিয়েছে, মৎস্য বিভাগের তরফে শনিবার সকালে রামেশ্বরম জেটি থেকে ১৬৯টি নৌকাকে টোকেন দিয়েছিল। রোববার সন্ধ্যায় এসব নৌকা তীরে ফেরার কথা ছিল। তবে সবকটি ফেরেনি। এর তীব্র নিন্দা করেছে মৎস্যজীবীদের সংগঠন। তারা মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, মৎস্যজীবীরা শুধু জীবিকাই হারিয়ে ফেলেছে তাই নয়, শ্রীলঙ্কার সরকারের কাছে তাদের সম্পত্তিও শেষ করে ফেলছেন। সংগঠনের এক নেতা জানান, ২০১৮ সাল থেকে প্রায় ২৭০টি ট্রলার আটক করা হয়েছে। অনেক মৎসজীবী তাদের জীবিকা হারিয়েছেন এবং তাদের পরিবার ঋণের বোঝায় চাপা বয়ে বেড়াচ্ছেন।