ইদ উল আধাকে কেন্দ্র করে ওড়িশার বালেশ্বরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে শহর। এরপরেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বালেশ্বরে কারফিউ জারি করেছে প্রশাসন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে, আগামী ২০ জুন সকাল ১০টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়েছে। এছাড়াও মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ।
আরও পড়ুন: বাংলায় দাঙ্গা করার ছক কষছে বিজেপি, মন্ত্রিসভার বৈঠকে আশঙ্কাপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
জানা যাচ্ছে, ঘটনার সূত্রপাত হয় সোমবার ইদ উল আধা উদযাপনকে কেন্দ্র করে। রাস্তায় রক্ত পড়ে থাকতে দেখে গোহত্যা সন্দেহে ২ সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। তারা একে অপরের লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছুড়তে শুরু করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। পরে পুলিশকে লক্ষ্য করেও ইট পাথর ছোড়া হয়। সব মিলিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হওয়ার পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয়েছে ১০টি মোটরসাইকেল এবং দুটি গাড়ি। এছাড়াও একটি ধর্মীয় স্থান ও বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই ঘটনার পরে পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৩৪ জনকে আটক করেছে।
এদিকে, এই ঘটনার পরেই প্রশাসনের তরফে সোমবার শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র জরুরি এবং চিকিৎসা পরিষেবা সারা সমস্ত মানুষের চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রায় দু’লক্ষ জনসংখ্যা বিশিষ্ট শহরের সমস্ত প্রবেশ এবং বাইরে বেরোনোর রাস্তা সিল করে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। আপাতত এছাড়াও সমস্ত ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বালেশ্বরে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। চার জন আইপিএস অফিসারকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেখানে।
সমাজ মাধ্যমে যাতে কোনওভাবেই যাতে গুজব বা ভুয়ো খবর না ছড়িয়ে পড়ে তার জন্য শহরটিতে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। ওড়িশা পুলিশের ডিজি অরুণ সারঙ্গী জানান, গোটা শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যাতে নতুন করে হিংসার ঘটনা না ঘটে তার জন্য প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে নতুন করে আর কোনও হিংসার ঘটনা সেখানে ঘটেনি।
উল্লেখ্য, ওড়িশায় প্রথমবার বিজেপি সরকার শপথ নেওয়ার মাত্র চারদিন পরেই এমন সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়ায় উঠেছে প্রশ্ন। বালেশ্বরে লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের দুটিতেই জয়ী হয়েছে বিজেপি। তবে কোনওভাবেই যাতে সহকারে ভাবমূর্তি নষ্ট না হয় তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি ইতিমধ্যেই বালেশ্বরের জেলাশাসক হাসির ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বালেশ্বরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।