উদ্ধার করার পরেও বাঁচানো গেল না। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই মৃত্যু হল মধ্যপ্রদেশের গুনা জেলার রাঘোগড়ের বালক সুমিত মীনার। ১৪০ ফুট গভীর কুয়োয় পড়ে ৩৯ ফুট গভীরে আটকে গিয়েছিল বালক। সেখানে টানা ১৬ ঘণ্টা ধরে অভিযান চালিয়ে বালককে উদ্ধার করা হয়েছিল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকাকালীন মৃত্যু হয় সুমিতের। তার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'যদি কালেক্টর ম্যাডামের মেয়ে হত?', রাজস্থানে কুয়োতে আটকে কন্যা, কাতর আর্জি মায়ের
উদ্ধারকারী দল জানিয়েছে, সুমিতকে উদ্ধারের পর থেকেই তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। স্ট্রেচারে উঠিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তাকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে স্থিতিশীল করার জন্য বারবার চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই মারা যায় বালক। রাঘোগড়ের পিপলিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুমিত শনিবার সন্ধ্যায় ঘুড়ি ওড়াতে বেরিয়েছিল। সেই সময় ৩৯ ফুট গভীর ওই কুয়োয় অসাবধানতাবশত পড়ে যায় সে। এদিকে, সুমিত দীর্ঘক্ষণ বাড়ি না ফেরায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তারা সুমিতের খোঁজ করতে শুরু করেন। সেই সময় তারা কুয়োর ভিতরে সুমিতের মাথা দেখতে পান। এরপরেই পুলিশ প্রশাসনকে খবর দেন গ্রামবাসীরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় উদ্ধারকারী দল। দুটি জেসিবি এবং একটি পোক্লেন মেশিন ব্যবহার করে কুয়োর সমান্তরালে খনন কাজ শুরু হয়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকাজে গতি আরও বেরে যায়। আরও দুটি জেসিবি সাহায্যের জন্য আনা হয়। উদ্ধারকারী দল রাতভর খনন চালায়। অবশেষে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কুয়োর সমান্তরালে ৪৫ ফুট গর্ত খনন করে ফেলে উদ্ধারকারী দল। এনডিআরএফ কর্মীরা তখন হাতে করে গর্ত তৈরি করে কুয়ো পর্যন্ত একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করেন।
এদিকে, বালকের অবস্থা জানার জন্য কুয়োয় একটি ক্যামেরা নামানো হয়। তাতে দেখা যায়, তার গলা পর্যন্ত জল রয়েছে। এই পুরো উদ্ধারকাজ চলার সময় পর্যন্ত ব্যাপক উৎকণ্ঠার মধ্যে কেটেছে পরিবারের সদস্য এবং গ্রামবাসীদের। সুমিতের বাবা ওই সময় সারাক্ষণ কাছের একটি মন্দিরের সিঁড়িতে থেকেছেন। ছেলেকে বাঁচানোর জন্য প্রার্থনা করেছেন। আরও জানা যায়, উদ্ধারকাজ চলাকালীন বালককে নিরাপদ রাখার জন্য পাইপে করে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়েছিল।
জেলা শাসক ডাঃ সতেন্দ্র সিং সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ডাক্তার এবং অ্যাম্বুলেন্স সহ মেডিক্যাল টিমকেও ঘটনাস্থলে প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। প্রচুর অক্সিজেন সিলিন্ডারও রাখা হয়েছিল।শেষ পর্যন্ত সুমিতকে উদ্ধার করা গেলেও হাসপাতালে আনার কিছুক্ষণ পরেই তার মৃত্যু হয়। গুনার পুলিশ সুপার সঞ্জীব সিনহা জানিয়েছেন, বালকের মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের পরেই জানা যাবে।